তোমার বউ কি মাস্টারি করে? তাহলে ছেলে থাকে কার কাছে? এই ধরণের একেবারে ব্যক্তিগত প্রশ্ন একজন প্রায় অপরিচিত ব্যক্তির মুখ থেকে শোনা অস্বাভাবিক ও অস্বস্তিকর লাগে শুভজিতের। এমনিতেই বাগুইয়াটি থেকে বাসে ওঠা ইস্তক রীতিমত নোংরা পোশাক পরা বয়স্ক লোকটা কথা আর প্রশ্নের তোড়ে কানের পোকা মেরে দিচ্ছিল। ‘তুমি’ ‘তুমি’ করে এইসব ব্যক্তিগত প্রশ্ন আসতেই ব্যাপারটা বেশ বিরক্তিকর এবং সন্দেহজনক লাগতে শুরু করল শুভজিতের। তাই বাসটা উল্টাডাঙ্গায় আসতেই কোনোরকম প্রশ্ন-উত্তরের অবকাশ না রেখেই হঠাত্ করে বাস থেকে নেমে পড়ল সে।
কিন্তু অফিসে যাওয়ার পথে যতই সময় গড়াতে থাকল কী রকম একটা অপরাধবোধে মনটা খচ খচ করতে লাগল শুভজিতের। অবশেষে সিনিয়ার কলিগ ফাল্গুনীদাকে মনের কথা উগরে দিয়ে হালকা হল সে। শখের লেখক ফাল্গুনীদা শুভজিতের কাছে ব্যাপারটা তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিলেও মন থেকে কিছুতেই ঝেড়ে ফেলতে পারলেন না। বাড়ি ফিরে গিন্নীকে বললেন ঘটনাটা। স্বস্তি পেলেন। পরে গিন্নী ঘটনাটা বললেন কাজের মেয়ে বাসন্তীকে। বাসন্তী তার স্বামী কার্তিককে, কার্তিক আবার তার অফিসের সুইপার লক্ষ্মণকে, সে আবার তার…
এই রকম বিচিত্র পথে চক্রাকারে ঘুরতে ঘুরতে গল্পটা অদ্ভুতভাবে ফিরে আসে সেই নোংরা পোশাক পরা বয়স্ক লোকটারই বউ-এর কাছে। বুড়ি বলে জানো তো, রাস্তাঘাটে এখন কত বদমাশ লোকজন থাকে! গতকাল নাকি এক ভদ্রলোককে বাসের মধ্যে তার বাড়িতে কে কে আছে, কখন ছেলে একা থাকে -এসব প্রশ্ন করছিল একটা ছেলেধরা ডাকাত!
সব শুনে বুড়োটাও বিরস তির্যক হাসি হেসে বলে, তাই নাকি! সত্যি, যা দিনকাল পড়েছে।