প্রচ্ছদ
বিব্রত বাতাসের তোড়ে উড়ে যায় সম্ভ্রম
সকালের রক্তিম সূর্য ডানা মেলে দিলে স্বচ্ছতা আসে
দিনের বিশ্বাস ভঙ্গ হয় বলে রাতের পূজা করি
বিনম্র বিশ্বাস বিসর্জন দিই অনায়াসে
অপরাধ রাজ্যে মাথা চাড়া দেয় জৈবনিক অভ্যাস
সতর্ক বানীর শেকড় কেটে দিই
মায়াময় পৃথিবীর অলীক উপলব্ধিতে ধর্ষিত হয় সকাল
ব্যবসার হাটে মরে যায় ভ্রূণের শিকড়
অপারেশন টেবিলে আর্তমূখ দেখেনা ডাক্তার
টাকার নদীতে মানবিকতা হাবুডুবু খায়
মাকড়সার জালে আটকে যায় দ্রোহহীন পরিচয়
অস্বীকৃতির কবজ পড়ে বিভাজন টানা হয় পৃথিবীর আঙিনায়
রাষ্ট্রের শ্লীলতাহানি হানি করি নির্দিধায়
জাগতিক সুখে করি যোনি পূজা
অসহায় স্বপ্নেরা অবিশ্বাসের সীমানায় ঢুকলে বাস্তুহারা হয় স্বপ্নের কড়চা
ছায়াবৈচিত্রে ঢুকে পড়ে ধ্বংসের আগুন
পুড়ে মরে অসহ্য আহ্লাদ
লুটোপুটি করে ঋতুবতী সময়
প্রাত্যহিক জীবনে আঁকা হয় সন্দেহ তত্বের প্রচ্ছদ
লুকোচুরি
চেতনার ছায়াঘেরা পথে ধূসর অস্তিত্বের দারিদ্র্য চমকে দেয়
বিষাদ পোশাকে ঢেকে রাখি সম্ভ্রম
আমরা ঝাঁকে ঝাঁকে বড় হই
ঝাঁকে ঝাঁকে মরি
করি অন্ন- বস্ত্র- বাসস্থানের গান
ডানায় বেঁধে দেয় ময়ূরের পালক
লাঠি সোটা নিয়ে নেমে পড়ি দাদাদের এলাকা দখলের খেলায়
বেশি বেশি পাওয়ার লোভে দল ছুট হই
শেকড়হীন অস্তিত্বের কথা তখন মাথায় থাকে না
ভুলে যায় অলৌকিক দলের ছত্রছায়ায় আমরা পুষ্ট
নিশানা বদল হলে অসহায় সমুদ্রে অপ্রিয় প্রেমের প্রস্তাব পাঠায়
ভ্রান্ত আসকারা গুলো ঢেউয়ের তালে তালে নাচে
ধূর্ত শেয়াল মাথা মোড়ানোর ঘুঁটি সাজায়
খেতে এসে হয়ে যায় খাবার
কালের সীমানায় নষ্ট হয় হৃদয়ের স্বরলিপি
জীবন জুড়ে ব্যথার মলম লাগায়
পড়ি মনুষ্যত্বহীনের রঙিন চশমা
ডুবে যায় চাঁদ—
ঝড়ে উড়ে যায় মনুষত্ব
অভিমানগুলো সচেতনার ছায়ায় ডুবে যায় সমৃদ্ধি মাতাল অস্তিত্ব অবতারে মূর্তি বানায়
ঢেকে রাখি লুকোচুরির গহীন পথ
এবং স্ববিরোধিতা
ভালোবাসার মানুষ গুলো আঁজলা ভরে দেয় দুঃখ
চেয়ে থাকি প্রবাহমান নদীর ধারে
বেহালায় বাজে ক্ষিদের সুর
জ্যোৎস্না চুঁইয়ে নেমে আসে রক্ত মাখা চাঁদ
পেয়ালায় নাচে অবয়ব শূন্য ধর্মাত্মা
আনন্দময়ীর বিষাদ ভিত্তিক মঙ্গল ঘন্টা বাজে পাড়ায়
অসহিষ্ণু বারান্দায় মোড়ক সাজায় বিষাদ কলস
ভ্রান্তির আসকারায় ঘাসের ডগায় জমে শিশির
অসন্তোষের চামচে শরবত খায় সম্প্রীতির স্বপ্ন
বিবর্ণ আলোয় ডুবে যায় বিশ্বাসের নৌকা
জীবন বোধের পৌষ্টিক আলোয় স্নান সারে বিকলাঙ্গ আঁধার
জীবনানন্দ হেঁটে যায় অনন্ত কাল
আঁজলা ভর্তি দুঃখ নিয়ে চুষতে থাকি অবক্ষয়ের স্তন—
অস্থির শূন্যতা জাপটে ধরে
আত্মাঅনুরণনের পথে হেঁটে যায়
দরজায় কড়া নাড়ে অজাগতিক বিষাদ
ছায়া-বৃত্তের ভাব-বিকার ঘটে
আত্মজাগরণের দরজায় ফুল ছিটায় মাইকেলের পদাবলী
হৃদয়পুর জুড়ে খেলা করে সন্যাসী আত্মা
বেদনার আরতি সাজায় স্ববিরোধীতার মন্দিরে
অদৃশ্য পতাকা ওড়ে দুঃখী বাতাসে—
মোহ
সভ্যতার আঙিনায় পাক খায় অবিনশ্বর রূপকথা
মাথার উপর ঘুরছে পাখা
ঠান্ডা ঘরে চিন্তার নাক ডাকা
অন্তর বেদনে কাটে রাত, সঙ্গী যত মশা ডাকা।।
জ্ঞান বুড়োর পুটলিতে বাঁধা এবড়ো খেবড়ো জ্ঞান
ইহকাল পরকাল মিথ্যে অভিধান ডালফাংড়ার গান
বেঁচে আছি এই খুব, সহিষ্ণু মনের সুচারু সংগ্রাম।।
উপলব্ধির স্তরে কলঙ্কিত হয় হীনমান্য সাধু ভেজা ভাতে বেগুন শানা
বিষন্ন দিনের আনাগোনা
ঝলসে উঠে অন্ধ বিবেক, ধর্ম নিয়ে তা- না না -না ।।
পৃথিবী ভর্তি দুঃখ নিয়ে হতাশার ঢেউ ওঠে
আত্মধ্বংসের প্রবাহ আসে
জীর্ণ স্বপ্নেরা মাথা কুটে বিশ্বাসের সহবাসে
সত্তাহীন পটভূমি ঝলসে যায় সভ্যতার জৌলুসে।।
সংসার সমুদ্রে কাটি সাঁতার প্রেমের মোহে পড়ে
হেরে যাওয়ার কলোরোলে দৈন্যের বৃষ্টি ঝরে
শোক উপচে পড়ে
হীনমন্যতার ক্ষরণ ঘটে ,শয়তানের হুংকারে।।
বিশ্বাসের আঙিনায় চলে বিবেকের দংশন
মায়াবতী মোহ-বায়ু নিঃশব্দে বয়
নিঃসঙ্গ সভ্যতা হরদিন রক্তাক্ত হয়
মোহের বন্যায় ভেসে যায় সম্মান, মেকি দেশপ্রেমিকের তাল লয়।।
স্থবির শূ্ণ্যতার বুকে
তখন ও সূর্যের গায়ে যাপন চিত্র আঁকা
ফ্যাকাশে সময় জুড়ে অগোছালো নিঃশব্দ মলাট
পথের দু’ধারে তখন মাথায় হেট করা মানুষের ভিড়
অসহজ হাসির শূন্যতা চোখে পড়ে
ব্যথার পাহাড় ঝাপসা হয় নিষ্পাপ কুয়াশায়
রাত কাটে আটপৌরে দীর্ঘশ্বাস ফেলে
উৎসবের উঠোনে মূল্যহীন রূপকথাররা আনে শোকপ্রস্তাব
আর্তনাদের ইতিহাস খুঁজে দেখি সভ্যতার ছায়ায় লালিত সব জীবনের উৎসব জোনাকিরা লিখে রাখে বুকের ভাঙাচোরা
ইবলিশরা জয়ধ্বনি করে
জীবনময় সভ্যতার ডানায় লেখা আমাদের অস্তিত্বের বাজনা
খুঁজে খুঁজে দেখি স্থবির শূন্যতায় প্রাণের স্পন্দন
জাগরণের স্পর্ধা নিয়ে মরুপাহাড়ের বুকে উট মাথা তুলে আকাশ দ্যাখে
অস্তিত্বের নৌকা ভাসমান হলে জাগরণের পাহাড়ি উপত্যকায় তখন শোনা যায় বৃষ্টির গান।