একবার কুড়িয়ে পাওয়া একটা শব্দকে কৌটায় ভরে
বেশ খানিক ঝাঁকিয়ে লুড়ুখেলার দানমারা’র মতো করে
ছুঁড়ে কানাপুট উঠে এসেছিল বলে
ঘর থেকে গুটি বের করতে পারিনি।
সাপলুডু খেললে অবশ্য ট্রেকে ওঠে যেতাম।
আমি আবার সাপলুডু খেলি না।
খেলি না মানে খেলতে জানি না—ব্যাপারটা তেমন নয়;
সাপলুডুতে অবিরাম সন্ধ্যা নামার মতো করে ভয় নামে–
ভিতর বাহির সব দিক থেকে ভয় নামে।
যেমন তেমন ভয় না–হাড় কাঁপানো ভয়–রক্ত জমাট করা ভয়।
পাথরের মতো শক্ত আর ওজনদার ভয়।
মই দিয়ে তরতর করে উপরে উঠবার আকাঙ্খা আর
উদ্বেলতার লোভ থাকলেও আমি মইকে ভয় পাই।
চালাচালির পুট দিতে দিতে কখন যে আবার দংশিত হই
তার আর কোন ইয়াত্তা নেই।
ফণা তোলা সাপের দ্বিখণ্ডিত জিভের ত্রস্ত হিসহিস
শব্দে ভিতরে ভিতরে কুঁকড়ে ওঠি।
কুণ্ডলী পাকিয়ে পড়ে থাকি নিস্তেজ জড় যেনো কোনো।
আমার হাত পা তখন পুড়ে যাওয়া আলগা পটকা বৃক্ষের ডাল
কেবলই ক্ষয়ে ক্ষয়ে মাটির সাথে কথা কয়।
এমন বিধ্বংসী পুট নিয়ে আমি সাপলুডু খেলি না।
খেলার কথা কস্মিনকালেও ভাবি না।
অথচ কুড়িয়ে পাওয়া শব্দ কৌটায় ভরে ঝাঁকিয়ে ঝাঁকিয়ে
পেলাম কি না কানাপুট!
কানাপুট!
কানাপুট!
কানাপুট আর ছক্কার এই যে দ্বৈরথ তাও কি
সাপের দ্বিখণ্ডিত জিভ?
ছক্কার লোভে লোভে কানাপুট পড়তে পড়তে
আমি এক গলাকাটা মোরগ নিজের রক্তে নিজেই স্নাত।
অথচ এই আমি ঘরে ফেরার চৌকাঠে ঠাঁই দাঁড়িয়ে থাকি
স্রেফ একটা কানাপুটের অপেক্ষায়।
কখন তিনি আসবেন?
কখন তিনি আসবেন?
আমি আর ঘরের চৌকাঠ ডিঙাতে পারি না।
আমি আর ঘরের চৌকাঠ ডিঙাতে পারি না।
=০=