অনন্ত কাশ্যপ, কলকাতা
বিদ্যাসাগর টাওয়ারের দে’জ পাবলিশিংয়ের নতুন বিপনি কাম প্রেক্ষাগৃহে মহাসামারহে প্রকাশিত হল সিদ্ধার্থ সিংহের ৩৪৪ তম বই। এর আগে কবিতা, গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ, নাটক, ছড়া, শিশুতোষ গ্রন্থ এবং বিষয়ভিত্তিক ৩৪৩টি বই বেরোলেও এই বইটি বাকি সব বই থেকে আলাদা।
এ বছরের ১৩ জানুয়ারি একটি বহুল প্রচারিত দৈনিক খবরের কাগজের রিপোর্টার হয়ে লেখক গিয়েছিলেন গঙ্গাসাগর মেলা কভার করতে। সেই মেলা থেকে প্রতিদিন তিনি যে লেখাগুলো পাঠাতেন সেগুলো ছাপা হতো সেই পত্রিকার প্রথম পাতায়। পত্রিকার ভাষায় অ্যাঙ্কার স্টোরি। ৫ দিন থাকলেও লিখেছিলেন ৭টি লেখা। যেদিন ফিরে এলেন সেদিন থেকেই আবার শুরু করলেন ৪৭তম আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলা নিয়ে অ্যাঙ্কার স্টোরি।
প্রত্যেকটি লেখাই মেলা প্রাঙ্গণ থেকে এক্সক্লুসিভ বিষয় নিয়ে লিখলেও সেগুলো শুধু ওই দিনে পড়ার জন্যই খবরের কাগজের কপি হয়ে থাকেনি। লেখার গুণে এবং বিষয় নির্বাচনে হয়ে উঠেছে চিরকালীন।
সেই লেখাগুলোকে নিয়েই গীবার্ণ প্রকাশনী এদিন প্রকাশ করল— দৈনিকের পাতার গঙ্গাসাগর থেকে বইমেলা।
এই বই প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গেই তৈরি হয়ে গেল ইতিহাস। কোনও দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত শুধুমাত্র অ্যাঙ্কার স্টোরি নিয়ে এই ধরনের কোনও বই বিশ্বে এই প্রথম। উপস্থিত ছিলেন দে’জ পাবলিশিংয়ের কর্ণধার সুধাংশু শেখর দে। তিনি বললেন, ‘সিদ্ধার্থকে আমি চিনি প্রায় ৪২-৪৪ বছর। যখন ও এই লেখাগুলো লিখছিল তখন আমি প্রতিদিন সকালে কাগজ খুলেই আগে এই লেখাগুলো পড়তাম। আমার তো খুব ভাল লেগেছিল। এই ধরনের লেখাগুলো সিদ্ধার্থ দারুণ লেখে। আমার ধারণা, আপনাদেরও ভাল লাগবে।’
সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত কথাসাহিত্যিক তপন বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, ‘আজ থেকে সাড়ে চার দশক আগে আমি যখন কাকদ্বীপে ছিলাম, তখন গঙ্গাসাগর মেলা চলাকালীন আমাকে দিনরাত পড়ে থাকতে হতো লট নাম্বার আটে। যার নাম এখন হারউড্ পয়েন্ট। সেই অভিজ্ঞতা নিয়ে আমি একটি উপন্যাসও লিখেছিলাম। এখন সেই মেলা আমূল পালটে গেছে। গঙ্গাসাগর মেলা এবং বইমেলা, দুটোই তো মানুষের মেলা। মেলা লোকের ভিড়। আশা করি এখনকার সেই ছবি ধরা পড়বে ওর এই বইতে। বিশিষ্ট লেখক সমরেশ বসু কুম্ভমেলা থেকে প্রতিদিন এই ধরনের কপি লিখতেন একটি দৈনিক পত্রিকায়। পরে সেটি বই হয়ে বেরোয়। সেই ‘অমৃত কুম্ভের সন্ধানে’ বইটি পরে ইতিহাস হয়ে গেছে। আশা করি সিদ্ধার্থের এই বইটিও জনপ্রিয়তা পাবে।’
যেহেতু সিদ্ধার্থ সিংহ আশির দশকের একজন জনপ্রিয় কবি তাই এই বই প্রকাশকে কেন্দ্র করে ছিল এই সময়ের উল্লেখযোগ্য কবিদের কবিতা পাঠ। অংশ নিয়েছিলেন রবীন বসু, দেবার্ঘ সেন, সুবিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়, উপাসনা সরকার, দীপংকর সেন, শীলা দাশ, দেবশ্রী দে, পিনাকী রায় (কনিষ্ক), অনিরুদ্ধ সুব্রত, মন্দিরা গাঙ্গুলি, চন্দন রায়, অমিত সরকার, মৃণ্ময় ভৌমিক, অরণ্যা সরকার, বাংলাদেশের মহম্মদ শাহাজাহান সাজু এবং গীর্বাণ প্রকাশনীর কর্ণধার তাপস গুপ্ত ছাড়াও বেশ কয়েকজন কবি।#