গারো পাহাড়ের চিঠি: পঞ্চব্রীহি

নয়াবিলের একটি গ্রাম চাটকিয়া- এক্কেবারে উত্তরের জনপদ। গত শতকের নয়ের শুরুর দিকে প্রথম এখানে এসেছিলাম। পাল্টে গেছে অনেক কিছু। কাঁচা পথ আর নেই- সবই পাকা- পিচের সোজা বা বাঁকা পথ এঁকেবেঁকে চলে গেছে এই গাঁও ওগাঁও। তখনকার পথ ছিল হয় কর্দমাক্ত নয় ধুলায় ধুলায় ধুসরিত হতো চোখ মুখ পা- পরনের কাপড় পর্যন্ত।

ধুলা এখানে ঈষৎ লালচে- ফ্যাকাশে লালচে। এখন এই পথ সেই পথ কালো পিচের পথ। পথের দুইপাশে হলুদের ধানক্ষেত আর সবুজ সবুজ গাছপালাদের কৌম সমাজ। সবুজ আর হলুদের মাঝে সাইন পেনের কালো মোটা দাগ দেখতে ভালই লাগে। চোখ আটকে যায় চোখে লাগানো কাজলরেখার মতো পিচপথ দেখে।

সেই সময়ে বাড়িগুলো রাস্তা থেকে ছিল অনেক অনেক দূরে- এখন রাস্তার পাশ দিয়ে বাড়ির বিস্তার বেশি- হলুদ আর সবুজ কিছুদূর পর পরই ভাগ ভাগ- বিভাজিত রায়ের মতো খণ্ড খণ্ড প্রান্তর। সময়ের স্রোতে পাল্টে যাবেই এটাই যাপনসূত্র। কোথাও কোনকিছু অনড় নয়- সবকিছু পাল্টে যায় পাল্টে যেতে হয় গতির সাধর্ম মেনে।

চাটকিয়ার পিচ রাস্তা ধরে হাঁটতে হাঁটতে ঢুকে পড়ি সেন্টু হাজংয়ের বাড়িতে। কৃষক সেন্টু হাজং এখন ধান বিজ্ঞানী সেন্টু হাজং। দেশজোড়া নাম তার।সারল্য মাখা হাসিতে আমাদের সম্ভাষণ জানালেও বসতে দেবে এমন চেয়ার বা জলচৌকা নেই।

আরও পড়ুন: গারো পাহাড়ের চিঠি: সাধু আন্দ্রিয়ের মিশন ও শান্তিধামে আড্ডা

উঠানের একপাশে গড়ে উঠেছে তার ধানগবেষণাগার। একপাশে ভাঙা গোয়ালঘর। অন্যপাশে লাগোয়া রান্নাঘর- আর পূব পশ্চিমে দু’চালা টিনের ঘর। অল্প পরিসরের বারান্দা রেখে সামনে বাহারি ফুলের গাছ। ঝুমকো ফুলে সোনালি মিহিদানা রঙে কাজ করা শিষ সবাইকে ছাড়িয়ে বেশ একটু উচুতে দুলছে আলোয় আলোয় ভেজা সবুজ পাতার সাথে সঙ্গত করতে করতে।

সেন্টু হাজংয়ের উঠানে দাঁড়িয়ে এক নজরে দেখে নিলাম সেন্টুর ঘরগেরস্থালী। উঠানে ঢুকবার বামের জমিতে সেন্টুর সারি সারি করে সাজানো নানা বীজধান সবে হলুদ মুখ তুলেছে। দেশি জাতের ধানের সাথে অন্য একটি দেশি জাতের সংকরায়ন ও পরাগায়ন করে নতুন বীজের সন্ধানের জন্যই সারি সারি রুয়ে দিয়েছে সেন্টু। ৩৭০ টি প্লট সেন্টু হাজংয়ের ট্রায়াল প্লট।

আরেক পাশে মজে যাওয়া স্যাতস্যাত পুকুর। প্রতিদিনের সাংসারিক ধোয়া পাকলার পুকুর ঘাটে কলা পাতার ছাওনি ঝুলিয়ে আড়াল করার আব্রু দেয়াল। অন্যপাশে সুপারির সারি। আম জাম কাঠালের বিস্তার। বাস্তু দেবীর থান- ছোট্ট করে বানানো মাটির ঘর- এখানেই বাস্তুপূজা এখানেই শ্রাবনী ব্রত মানে মনসা পুজা বা নয়াখাওয়া মানে নবান্নও অথবা চোরমাগা বা পৌষ পার্বনের সাংবাৎসরিক ধর্মাচারণ পালন করেন বংশ পরম্পরায়।

পর্বে পর্বে ধান গোলায় ওঠার সাথে হাজংয়ের পূজা পালা পার্বন যাপনের নানা সূত্র বাঁধা এই উৎসবগুলো। উপকরণে নয়া ধান শুধু ভাত বা মিষ্টান্ন তৈরি নয় আল্পনার আঁকার পিটুলি গোলাও ধনা ধানের সংশ্রব চাই।

নানা কারণে এই তল্লাটের দেশি ধান হারিয়ে গেছে। বাজারনির্ভর বীজ ও রাসায়নিক সার নিয়ে চলা জমির শরীর প্ঁচে গেছে। স্বাভাবিকতা হারিয়ে গেছে। এতো এতো ক্যামিক্যালে কার শরীরইবা টিকে টিকার মতো করে।নতুন কেনা বীজের দাপটে কৃষকের ঘর থেকে বিতাড়িত দেশি বীজ। শুধু কি বীজ? বীজ তৈরি ও সংরক্ষণ বিদ্যা নানা লোভে চাপে তাপে ভাপে ঘরের কোণ থেকে হারিয়ে গেছে।

আরও পড়ুন: কবি অভিজিৎ দাস নিখোঁজের দশ বছর

হারিয়ে গেছে বগি,হালই, গোলাপী, মালঞ্চি, ময়নাগিরি, মালসিরা, পারিজাত, কাইশ্যা বিন্নি, শংবিন্নি, দুধবিন্নি, বিরই, চাপাল, পুরাবিন্নি নানা নামের ধান ছিল কৃষকের জমিনে আর কৃষনীর বাতায় ঝুলে রাখা ঝুলানো মাটির কলসীর কোটরে। বীজ ধান কৃষানীর হাত থেকে এখন কর্পোরেট ব্যবসায়ীর হাতে উচ্চ ফলনশীল উৎপাদনের শ্লোগান মুখরতায়।

উঠানের ডানে ধিঙি নারিকেল গাছ- পর পর তিন চারটি। শুধু বেড়েই যাচ্ছে। ফলন নাই। ফলন বিহীন বাঞ্জা নারিকেল বৃক্ষ। গাছের উপরেও নাকি পড়ে কুনজর। নানা চোখের বিষ-দেখা নজরে নজরে হয়ে গেছে বাঁঝা গাছ। একদা ফলবতী নারিকেল এখন বাঞ্জা নারিকেল গাছ। ফলন নেই। গাছে লেগেছে মড়ক। আকাশমুখী প্রসারিত নারিকেলের ডাগ্গায় চিরল পাতা কুঁকড়ে যাচ্ছে। ঝুলে পড়ছে। হেলে পড়ছে। সবুজ পাতা দুপুরের রোদে কালচে রঙের হয়ে হেলে পড়ছে।

তাই শামুক গরম জলে সিদ্ধ করে মালা গেঁথে ব্যবহৃত ঝাঁটা লকেট করে গাছে বেঁধে দিয়েছে হাজং গিন্নী। হয়তো আসছে মৌসুমে নারিকেল গাছে থোকা থোকা সবুজ কাঁদি ঝুলবে। এই বিশ্বাস অবলা হাজংয়ের আছে বটে তবে সেন্টুর নজর হাতের মাধ্যমে পরাগায়ন ও নির্বাচনের মতো কঠোর ধৈর্য ও সহিষ্ণুতার নিরীক্ষে বাঁধা।

এই পরিক্ষা বাস্তবিক কাজ। সেন্টু একটি এনজিয়ের কাছে শিখেছে। গোটা পঞ্চাশ জন দলের সাথে সে শিখেছি কিভাবে ধানের সংকরায়ন করতে হয়। একমাত্র তিনি-ই হাতে কলমে শেখা বিদা বাস্তাবিক কাজে প্রয়োগ করতে নেমেছেন। এক দেশি ধানের সাথে অন্য দেশি ধানের সংগমে ২৩ প্রজাতি নতুন জাতের ধানের বীজ আবিষ্কার করে বীজধানকে বানিয়েছেন কৃষকের পালন কর্তা। একেক বীজের একেক নামে নামাঙ্কিত করেছেন। কোনটা নিজের নামের সাথে জুড়ে দিয়েছেন।

সেন্টু পাইজাম তেমনি এক ধানের নাম এখন কৃষকের কৃষিকথা। মাঠে আবাদ বেশি। কৃষি বিজ্ঞানী সেন্টু হাজং তিন তিনবার উচ্চ মাধ্যমিক দিয়েও কলেজের বৃত্তি পাড় হতে পারেন নি। তা না পারুক। দুই ধানের সঙ্গমে পরম্পরায় প্রজ্ঞা ঠিক ঠিক করায়ত্ত করেছেন সেন্টু। তিনি নিজেই এখন ইতিহাস। নিজের উঠান এখন ধান গবেষণা কেন্দ্র। এক জাতীয় দেশি ধানের সাথে অন্য আরেক দেশীয় ধানের সংমিশ্রণে একে একে ২৩টি নতুন জাতের বীজধান উদ্ভাবন করেছেন। উত্তর সীমান্তে মাঠে মাঠে তার নামে নামাঙ্কিত ধানই হেলেদুলে বাড়ছে। ফলন ভালো।

আরও পড়ুন: সাঁওতালি সংস্কৃতি

ছোট্ট দোচালা ঘর। পাশেই গোয়াল ঘর। ঢুকতেই ছোট্ট মাটির ঘর- বাস্তু দেবীর মন্দির। পাশে পুকুর রেখে এগিয়ে নিয়ে দেখালেন জমিতে নানা সারিতে সাজানো আরো আরো নয়া বীজের পরীক্ষামুলক আবাদ। সেন্টুর গবেষণাগার অপরিসর উঠানের একপাশে। পরিত্যক্ত ছেঁড়া জাল দিয়ে ঘেরা। ভাঙা বালতি বা মাটির টবের মাটির জরায়ুতে।

অন্যদিকে আবেদ চৌধুরীর গবেষনাগার অস্ট্রেলিয়ায়- উচ্চ প্রযুক্তির নানা কায়কারবার নিয়ে। সেখানেই তিনি যে ‘পঞ্চব্রীহি’ ধান আবিষ্কার করেছেন তার ফলিত রাপায়ন ঘটালেন তার শেকড়ের মাটি সিলেটের কুলাউড়ার কানিহাটি গ্রামে। ধান রোপনের প্রথাগত ধারনার ব্যত্যয় ঘটিয়েই আর্বিভাব ঘটালেন নতুন চাষাবাদের। এই আবাদে একবার করলেই পাঁচ পাঁচবার ফলন দিবে। সময় ও শ্রম যেমন সাশ্রয় হচ্ছে তেমনি মাটির শরীর থাকছে টেকসই। একবার ফলন দিয়েই যে ধান গাছের মৃত্য- মাঠজুড়ে পড়ে থাকে শুধু আঙুল চারেকের মতো মোতা বা নেড়া।

ড. আবেদ চৌধুরী মেধাবী ধান বিজ্ঞানী “আম কাঁঠালের মতো বছরের পর বছর টিকে থাকার সৌভাগ্য ধান গাছের হয় না” বলে একটা আক্ষেপ আবেদ চৌধুরীর ছিল। সাধারণত একবার রোপণে ধান গাছে একবার ফলন হয়। ধান কেটে নিলে ধানগাছ মারা যায়। সেটা খর হয়। কিন্তু ফলন শেষ হওয়ার পর একটি ধান গাছ পুরোপুরি না কেটে একই গাছে বিভিন্ন মৌসুমে আরও চার রকমের ধান কীভাবে উৎপাদন সম্ভব, তা আবিষ্কার করে চমক সৃষ্টি করেছেন অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসরত বাংলাদেশি বিজ্ঞানী ড. আবেদ চৌধুরী।

তিনি এ আবিষ্কারের নাম দিয়েছেন ‘পঞ্চব্রীহি’। ড. আবেদ চৌধুরী সংবাদ মাধ্যমকে জানান, “এই নতুন ধান চাষ পদ্ধতি সারা দেশের কৃষকদের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়া গেলে আগামী ৫০ বছরের জন্য গোটা জনগোষ্ঠীর খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব।”

বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সীমান্তবর্তী মৌলভীবাজার জেলায় তার নিজ গ্রাম হাজীপুর এলাকার কৃষকদের সঙ্গে নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে মাঠপর্যায়ে গবেষণা করেছেন। কোনো রাসায়নিক ছাড়াই বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির মাধ্যমে প্রায় ৩ হাজার প্রজাতির ধানের মিশ্রণ ঘটিয়ে তিনি পাঁচ রকমের ধান গাছ আবিষ্কার করেছেন। যা চাষের জন্য নতুন করে পাঁচ রকমের ধানের চারা রোপণ করতে হবে না। এতে কৃষকের সময় যেমন বাঁচবে, তেমনি সাশ্রয় হবে অর্থ ও বাড়বে উৎপাদন।

একই সঙ্গে এক জমিতে একবার চারা রোপণ করে বোরো, আউশ, আমনসহ বিভিন্ন মেয়াদে পাঁচ রকমের ধান উৎপাদন করা যাবে। ফলে দূর হবে দেশের খাদ্য সংকট। ড. আবেদ চৌধুরী আরও বলেন, ‘আমার এ আবিষ্কারের গবেষণাগার হলো প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমণ্ডিত মৌলভীবাজার জেলার সীমান্তবর্তী কুলাউড়া উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের হাজীপুর গ্রাম, যে গ্রামে আমি বড় হয়েছি। সেখানে আমার গবেষণার সহযোগী ছিলেন সেসব নিরক্ষর কৃষক যাদের গায়ে লেগে থাকে বাংলার জল-কাদার গন্ধ। তারা দীর্ঘদিন ধরে মাঠপর্যায়ের গবেষণায় দিনরাত আমাকে সহযোগিতা করেছেন। তাদের বুকে মিশে আছে ধর্ম ও বিজ্ঞান। এসব নিরক্ষর, সরলপ্রাণ, দেশপ্রেমিক কৃষককে সঙ্গে নিয়ে বিশ্বকে উপহার দিতে চাই উৎপাদনের শ্রেষ্ঠতম বিজ্ঞান। বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে আমার আবিষ্কারকে ব্যবহার করতে চাই না। আমি চাই এ আবিষ্কার দেশের মানুষের জীবনমান বদলে দিক। খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত হোক মাতৃভূমির মানুষের জন্য। ”

দীর্ঘদিন ধরেই ধান নিয়ে কাজ করছেন অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী জিন বিজ্ঞানী ড. আবেদ চৌধুরী। সেই গবেষণার ফসল হিসেবে বোরো জাতের নতুন ধান গাছ উদ্ভাবন করে চমক সৃষ্টি করেছেন তিনি।

আরও পড়ূন: গারো পাহাড়ের চিঠি: মিঠুন রাকসামের জ্যোৎস্নার দেমাক

একদিকে সেন্টু হাজং অন্যদিকে আবেদ চৌধুরী। দুজনেই কৃষি ও কৃষকের শক্তিশালী ভিত নির্মাণে তৎপর। একজন উচ্চ শিক্ষিত। আধুনিক হাতিয়ার করায়ত্ত। আধুনিক গবেষণাগার। অন্যদিকে সেন্টু হাজং তিন বারেও এইচএস সি ডিঙাতে না পারা অদম্য কৃষক সেন্টু নিজের অপরিসর উঠানই গবেষণাগার। ধৈর্য আর হাতে কলমে প্রশিক্ষণ আর তার পরিবার বাহিত বীজধান তৈরি ও সংরক্ষণের পরম্পরায় প্রজ্ঞা ২৩ প্রকারের বীজ আবিষ্কারের দিকে ঠেলে দিয়েছে।

মাটি তাকে টানে। মাটির উর্বরা তাকে তাকে উতালা করে। সেন্টুর যাপন মাটিকে কেন্দ্র করেই আর্বতিত। এই চাকটিয়া থেকে কোথাও যেতে চান না। বীজ নিয়ে ভাবনা সারাদিন। যে বীজ একদা ছিল কৃষাণীর সংরক্ষিত সম্পদ। তার মালিকানা। তার শক্তি। সেই বীজ নানা কায়কারবারে কৃষনাীর হাত থেকে সটকে পড়ছে। ক্ষমতাহীন হয়েছে নারী। ক্ষমতাহীন করে ফেলা হয়েছে। বাজার অর্থনীতির কথা বলে নারীর হাত থেকে বীজ চলে এসেছে কর্পোরেটের হাতে। তেমনি অন্যদিকে দেশী মাটির দেশী বীজ ধান চলে গেছে কর্পোরেটের রাসায়নিক কারখানায়। হাইব্রিড ধানবীজ নামে বাজারে এসেছে। ফলন বেশি হবে শ্লোগানে।

হাইব্রিড বীজ আর রাসায়নিক সার আর বিষে কৃষকের জমি পুড়ে খাক।একদিকে বীজ যেমন তার হাতে নেই তেমনি ধান বিক্রির বাজার। বীজ কিনছে বেশী দামে ধানে বেচতে গেলেই ধানের বাজার পড়তির দিকে। কৃষক ও কৃষাণী আর ওঠে দাঁড়াতে পারছেন না। সেন্টু হাজং বীজ সংরক্ষণে পক্ষপাতি। কৃষকের ক্ষমতায়নের পক্ষপাতি। তার উদ্ভাবিত বীজ বাজারে ছেড়েছেন। ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা। সেন্টুর পায়জামে ফলন বেশী।ধানের গোছা পুরুষ্টু। বিষ লাগছে না। এই তল্লাটে সেন্টু হাজং কৃষকদের ঘুরে দাঁড়াবার সাহস।#

চলবে…

ছবিঋণ: জ্যোতি পোদ্দার  

Facebook
Twitter
LinkedIn
error: বিষয়বস্তু সুরক্ষিত !!