মে দিবস পালন

বিশ্ব জুড়ে পালন করা হয় মে দিবস। পালনীয় এই দিনটির জন্ম সমাজতান্ত্রিক দেশ থেকে হলেও, পুঁজিবাদী দেশ, মে দিবসকে হাতিয়ার করেছে শ্রমিকের লড়াইয়ের হাতিয়ার হিসেবে।

মে দিবস গড়ে উঠেছিল কাজের জন্য নিকৃষ্ট পরিবেশ, অল্প বেতন এবং দীর্ঘ কর্মঘণ্টার প্রতিবাদে। ১৮৯৩ সালে সার্বিয়ার শ্রমিকরা এক মে দিবস র‍্যালি বের করেছিল।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর যখন দ্রুত শিল্প কারখানায় উন্নতি ঘটছিল, তখন রাশিয়ার সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের পথ ধরেই বিশ্বজুড়ে শ্রমিকরা মৌলিক চাহিদা পূরণে সংগ্রাম করতে শুরু করে।

অন্যদিকে ১৮৮৬ সালে ব্রিটিশ সমাজ সংস্কারক রবার্ট ওয়েনের উদ্ভূত চিন্তা থেকে, যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে ট্রেড ইউনিয়ন গুলি দিনে ৮ ঘণ্টা কাজের দাবিতে বৃহতম প্রতিবাদ কর্মসূচি শুরু করে।

রবার্ট ওয়েন ৮ ঘণ্টা কাজের দাবি পূরণের স্লোগান, ‘আট ঘণ্টা কাজ, আট ঘণ্টা বিনোদন এবং আট ঘণ্টা বিশ্রাম’।

সবচেয়ে বড় আন্দোলনটা হয় পয়লা মে শিকাগোতে, যেখানে প্রায় ৪০ হাজার শ্রমিক সমবেত হন।

সে সময় কারখানায় কোন নির্দিষ্ট কর্মঘণ্টা বা বিশ্রাম ছাড়াই টানা কাজ করে যাওয়াটা স্বাভাবিক ছিল। আর সে সময় শিকাগো ছিল যুক্তরাষ্ট্রের শিল্পকারখানা ও ইউনিয়ন সংগঠনগুলোর কেন্দ্র।

পরবর্তী কয়েক দিনে এই আন্দোলনকে ব্যবসায়ী ও রাজনীতি মহল পছন্দ না করলেও, আরও হাজার হাজার ক্ষুব্ধ শ্রমিক ও আন্দোলনকারীরা এই আন্দোলনকে সমর্থন করেন।

এ সময় কিছু নৈরাজ্যবাদীও এতে যোগ দেন, যদিও তারা কোনও রকম নিয়ম ও আইন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত সামাজিক কাঠামো স্বীকার করতেন না।

পরবর্তী কালে সমগ্র পৃথিবী জুড়ে পুঁজিবাদ অগ্রসর হয়েছে। মে দিবস যে কারণে গড়ে উঠেছিল তার অনেক ঝাঁজ এখন পান্তার মত ঠাণ্ডা। ভারতে জনগণ এখন কাজের বদলে রেশন পান। গরীব খেটে খাওয়া মানুষের হাতে এসেছে ট্যাব। তারা নিরোর মত বিনোদনে ঝুঁকছে। সেদিন এক রিক্সাচালক বলছিলেন , বাজারে আগুন। এই গরমে লোকে বেরোচ্ছে না। ফলে আয় কমেছে।’ চারদিকে হাহাকার আর কাজ হারানো মানুষের ভিড়। দশ বারো হাজারে কোনোমতে দিন যাপন করছে তারা। আবার পানেওলা শ্রমিক যথার্থ পরিশ্রম করতে চাইছেন না।

শ্রমদিবস আর পাঁচটি দিবসের মত সমান্তরাল গোলগাল একটা স্থুল দিন হিসেবে এখন পর্যবসিত হচ্ছে।#

Facebook
Twitter
LinkedIn
Print
error: বিষয়বস্তু সুরক্ষিত !!