লুনসেল

লুনসেল! নামটা শুনে নিশ্চয়ই চমকে গেলেন তাই তো?

অনেকেই মনে করেন কালিম্পং মানেই লাভা বা লোলেগাঁও। কিন্তু তার বাইরেও এখন নতুন নতুন রূপে আবিষ্কৃত হচ্ছে নতুন সব চমক। আসলে যত দিন যাচ্ছে উত্তরের কোলে লুকিয়ে থাকা অফবিট পর্যটক কেন্দ্রগুলো জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। আসলে মানুষ এখন অজানা অচেনাকে খুঁজে নিতে চায়। আসলে যারা ভ্রমণ পিপাসু তাদের মনের মধ্যে সবসময়ই নতুন কিছুর খোঁজ চলতে থাকে কিছুটা চেতনে, কিছুটা অবচেতনে। কামমালবাজার থেকে মাত্র ৩৫ কিলোমিটার দূরে কালিম্পং জেলার গরুবাথান ব্লকের উঁচু এলাকায় রয়েছে এমনই এক ঠিকানা। সবুজে ঘেরা ছোট্ট এই গ্রামের নাম লুনসেল। এখানকার অসাধারণ পরিবেশ ভ্রমণপিপাসু যে কাউকে দেবে শান্ত এবং শীতল অনুভূতি। ঘুরতে যাওয়ার প্ল্যান থাকলে শান্ত-স্নিগ্ধ এই জায়গাটিকে বেছে নিতেই পারেন। লুনসেল (Lungsel) থেকে কিছু দূরে পিচের রাস্তা শেষ হয়ে যায়।

চারদিক মনোমুগ্ধকর পাহাড়ে ঘেরা পরিবেশ। আর সেই সবুজের মাঝে পাহাড় থেকে বয়ে আসছে ঝর্ণার জল। কিছুটা পথ গেলেই শেষ পিচের রাস্তা। পাহাড়ি এই আকা‌-বাঁকা পথ তখন নিয়ে যাবে অন্য পাহাড়ি গ্রামে বা পাহাড়ের অন্য প্রান্তে। পুজোয় ঘুরতে যাওয়ার প্ল্যান থাকলে শান্ত-স্নিগ্ধ এই জায়গাটিকে বেছে নেওয়া যেতেই পারে।

লুনসেল (Lungsel) থেকে কিছু দূরে পিচের রাস্তা শেষ হয়ে যায়। কোনও গাড়ি যাওয়ার পথ নেই। তবে সেখান থেকে হেঁটে বা ট্রেকিং করে অন্য পাহাড়ি গ্রাম কিংবা পাহাড়ের অন্য প্রান্তে অনায়াসে পাড়ি দেওয়া যেতে পারে। ডুয়ার্সের সমস্ত নদনদীর পাশাপাশি লুনসেল থেকে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তও দেখা যায় মন ভরে। রাস্তার পাশে এমন অনেক জায়গা আছে, যেখানে চড়ুইভাতির আয়োজনও করা যায়। বন্ধু-বান্ধব বা পরিবার নিয়ে ঘুরতে গেলে ঘোরার সঙ্গে চড়ুইভাতির আনন্দও উপভোগ করা যায়। লুনসেল রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ, দেখা মেলে হরেকরকম পাখিরও। ছোট্ট এই গ্রামটি ঘোরা হয়ে গেলে গাড়ি নিয়ে কাছাকাছির মধ্যে লাভা, লোলেগাঁও, এবং ঝান্ডিতে খুব সহজেই ঢুঁ মারা যায়। পাহাড় প্রেমীদের জন্য নিঃসন্দেহে আদর্শ গন্তব্য লুনসেল।

এবার নিশ্চয়ই জানতে চাইবেন কীভাবে যাওয়া যাবে। নিউমাল জংশন স্টেশন থেকে গাড়ি করে পৌঁছতে হয় এখানে। মালবাজার-ওদলাবাড়ি-পাথরঝোড়া-মানজিং হয়ে যাওয়া যায় লুনসেলে। আবার গরুবাথান হয়েও পৌঁছনো যায় পাহাড়ে ঘেরা ছোট্ট গ্রামটিতে। রাস্তায় পড়বে মানজিং ভিউ পয়েন্ট। এখানে কিছুটা সময় কাটানো যেতেই পারে। চারপাশে পাহাড়ে ঘেরা। জঙ্গলের মাঝে পাহাড় বেয়ে নেমে এসেছে ঝর্নার জল। আর পিচ রাস্তা শেষ হলেই লুনসেন। দুদিনের ছুটিতে এখানে এলে একদিন কেটে যাবে গ্রাম ঘুরে দেখতে। গ্রামকে দুচোখে দেখার পর প্রতিবেশি গ্রামকেও দেখতে মন চাইবে। পিচ রাস্তা না থাকায় হেঁটে বা ছোট্ট ট্রেক করে এই লুনসেনের আশেপাশের অঞ্চলকে ঘুরে দেখতে মন চাইবেই।

ইতিমধ্যেই কিন্তু এখানে পর্যটকদের আগমন ঘটতে শুরু করেছে। পুজোয় বাড়তে পারে ভিড়। বর্তমনে রকারি কোনও লজ বা হোটেল নেই ঠিকই, তবে একটি বড় হোম স্টে রয়েছে। তাই আগেভাগেই বুকিং সেরে ফেলতে হবে। পুজোর সময় পরিবার নিয়ে এখানে ঘুরতে আসার মজাই আলাদা। তবে অনেকের মতেই সরকারিভাবে এখানে হোটেল বা লজ খুললে ভাল হবে।”#

ছবিঋণ: মণিজিঞ্জির সান্যাল

Facebook
Twitter
LinkedIn
Print
error: বিষয়বস্তু সুরক্ষিত !!