সামাজিক, সাংস্কৃতিক, নাট্য আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃত, ঢাকা থিয়েটার ও বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটারের প্রধান, বঙ্গীয় সাহিত্য সংস্কৃতি সংসদের সভাপতি পর্ষদের সদস্য, বীর মুক্তিযোদ্ধা নাট্যঋষি নাসির উদ্দীন ইউসুফ বাচ্চু দেশে বিভিন্ন স্থানে প্রত্ন নিদর্শন ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে সন্ত্রাসী হামলা ও নাশকতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদী হবার আহবান জানিয়েছেন।
আমাদের প্রতিবাদী হতে হবে, প্রতিরোধ করতে হবে সন্ত্রাসীদের। সংস্কৃতির অঙ্গনে নাশকতা, আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়া, হামলা করা ইত্যাদি ঘটনা উপর্যুপরি বেড়ে চলেছে। যারা এসব করছে, তারা চিহ্নিত। ওদের শাস্তি হচ্ছে না, গ্রেফতার করা হচ্ছে না। ওদের রূখতে হলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সকল কবি সাহিত্যিক শিল্পী, গবেষক এবং বুদ্ধিজীবী সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। সংবিধানকে রক্ষা করতে হলে, অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক দেশ গড়ে তুলতে হলে, সাংস্কৃতিক পরিবেশ স্বাভাবিক রাখতে হলে, প্রত্ন নিদর্শন রক্ষা করতে হলে, সকল ধর্ম ও নৃগোষ্ঠীর বসবাস সমমর্যাদার করতে হলে, সকলের সম্মিলিত প্রয়াস প্রয়োজন।
সংস্কৃতির অঙ্গনে যারা নাশকতা করছে, অগ্নিসংযোগ করে ধ্বংস করছে, তারা একাত্তরের পরাজিত শক্তি। প্রত্যেকটি ঘটনায় প্রত্যক্ষ পরোক্ষভাবে জামাত শিবির, রাজাকার ও তাদের দোসররা জড়িত। ওরা বাংলার ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে ধ্বংস করতে চায়। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আঘাত করে দেশকে উগ্র মৌলবাদী সমাজ রাষ্ট্রে পরিণত করার চক্রান্তে মরিয়া হয়ে উঠেছে। আসুন আমরা ওদের সমুচিত জবাব দেই। প্রতিরোধ করি।
নাট্যঋষি নাসির উদ্দীন ইউসুফের ফেসবুকে দেয়া স্টাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো।
“বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটার’র অন্যতম সংগঠন মানিকগঞ্জ জেলার সিঙ্গাইর উপজেলার নিরাভরণ থিয়েটার’র মহড়কক্ষ দুরভিসন্ধিমূলক ভাবে আগুন দিয়ে মহড়া ও চলমান নাট্য প্রযোজনার দ্রব্যাদি ও সেট সমূহ পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। কুশলী নাট্যকার আনন জামানের তত্ববধানে দলটি ইতিমধ্যে দেশের চলমান নাট্যান্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। আমি তিনবছর আগে এই মহড়াকক্ষে নিরাভরণ থিয়েটা’র তরুণ উচ্ছল নাট্যকর্মীদের সাথে মিলিত হয়েছিলাম।আজ এই সংস্কৃতি চর্চার স্থানটি আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেল। আমরা এই অন্তর্ঘাত মূলক সংস্কৃতি বিরোধী কার্যকলাপের তীব্র নিন্দা জানাই। এবং ঘটনার সাথে সরাসরি জড়িত এবং নেপথ্যে থেকে ইন্ধানদাতাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের কাছে জোর দাবী জানাচ্ছি।একইসাথে দেশের সকল সংস্কৃতি কর্মীদের এই সন্ত্রাসী কার্যলাপের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।”
বঙ্গীয় সাহিত্য সংস্কৃতি সংসদের পক্ষ থেকে সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করছি।