অণুগল্প: সিঁদুর খেলা

ইউনিভার্সিটি চত্বরে তুলকালাম! ঘটনাটা সমস্ত ডিপার্টমেন্টে, দ্বারভাঙ্গা বিল্ডিং, লাইব্রেরী এমনকী বাইরে কলেজ স্ট্রীটের রাস্তায়, কফিহাউসেও দ্রুত ছড়িয়ে পড়ল দাবানলের মতোই। ক্লাসরুমের মধ্যেই বাংলা বিভাগের ছাত্রী সহেলীর সিঁথিতে সিঁদুর তুলে দিয়েছে সহপাঠী তুহিনশুভ্র! বুড়ো ইউনিভার্সিটির নাক উঁচু কর্তাব্যক্তিদের নাকে রীতিমতো ঝামা ঘষে কেলোটা কলতলায় গিয়ে দাঁড়াল। ফলে ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক-শিক্ষিকা সকলেরই মুখ থমথমে। ‘বিচার চাই’, ধরনা, আত্মহত্যার হুমকি ইত্যাদি ইত্যাদি…
ভাইস চ্যান্সেলারের ঘরে আভ্যন্তরীন বিচারসভা। সব পক্ষই রীতিমতো গম্ভীর। কেউ কোনও কথা বলছেনা দেখে বাংলা বিভাগের প্রধানই প্রশ্ন শুরু করলেন। কাঁচুমাচু মুখ করে দাঁড়িয়ে থাকা ছেলেটিকে বললেন, তাহলে তুমিই সহেলীর সিঁথিতে সিঁদুর তুলে দিয়েছো? তোমার এত বড় স্পর্ধা! ক্লাস রুমের মধ্যে! তোমার লজ্জা করল না? এমন একটা প্রাচীন ঐতিহ্যশালী বিশ্ববিদ্যালয়ে…
-আজ্ঞে না, আমি তো সিঁদুর তুলিনি, আগামী কাল দোল বলে আমি শুধু আবির দিয়ে…
-ও: আবির, কিন্তু ওর সিঁথিতে তুলেছিলে তো? এটাও কম অপরাধ নয়। তা সহেলী, তুমি কি ওর সিঁদুর তোলা, স্যরি, আবির তোলা স্বীকার করো?
-মোটেই না, কক্ষনো না। আমি ওকে ঘেন্না করি! ছি !
-বেশ, তাহলে আবির মুছে ফেলো, বাড়ি যাও। ল্যাটা চুকে গেল ।
তার এমন জলবত্ সহজ সমাধান শুনে উপস্থিত সকলে মায় ভাইস চ্যান্সেলার পর্যন্ত স্তম্ভিত হয়ে গেলেন।
Facebook
Twitter
LinkedIn
Print
error: বিষয়বস্তু সুরক্ষিত !!