বাংলা মায়ের বুকের উপর কাঁটাতারের বেড়া,
এপার বাংলা ওপার বাংলা মধ্যে রক্তনদীর ধারা।
বুকের ক্ষত দুঃখ যত মাতৃভূমি মাটি ছাড়ার ব্যথা,
মৌলবাদী অপশক্তির বিভেদ, বিষমন্ত্র গাথা।
বাংলা আমার মায়ের ভাষা অটুট বাঁধন বাঁধা,
ভাষার বাঁধন দৃঢ় করে, শিথিল ধর্ম বিভেদ কাঁটা।
গঙ্গা- পদ্মা দুটি কর সবুজ ধানের শীষে,
স্নেহের আঁচল বিছিয়ে রাখে মেঠো পথের শেষে।
দুর্গাপুজো, ঈদের নিশান, চৈত্র গাজন মেলা,
ষড় ঋতুর আসা যাওয়া বেড়া ভাঙ্গার খেলা।
বসন্তের কোকিল আসুক উড়ে কাঁটাতারের পারে,
সবুজ টিয়া চন্দনা সে যায়না ধরা তারে।
ডানায় তার আবির গুলাল রামধনু রং আঁকে,
তোমায় আমায় দেখা হলো ধলেশ্বরীর বাঁকে।
সারা দপুর ঢেউ গুনেছি ইছামতির কূলে,
গাং শালিখের গান শুনেছি শিরিষ গাছের মূলে।
ছেলেবেলার গল্প কথা, কাঁচা আমের গন্ধ, পাকা বকুল দানা,
বটের ছায় তোমার কোলে রাখতে মাথা ছিলনা তো মানা।
যতই তোমরা দাও না বেড়া এপার ওপার ভাগ,
মাটির উপর তারের কাঁটা দেশ বিভাগের দাগ।
বুকের মধ্যে রবি ঠাকুর, নজরুল আর জীবনানন্দ দাশ,
আউল বাউল লালন ফকির অচিন দেশে বাস।
আজও আসে পূবের বায়ে তোমার গায়ের গন্ধ,
নেইকো উপায় পরশ পাওয়ার দেউড়ি দুয়ার বন্ধ।
মনটাকে কে বাঁধবে বলো মনটা উড়ো পাখি,
বিনি সুতোয় বাঁধা মোদের প্রণয়- প্রেমের রাখি।