রঞ্জনা রায়

অখন্ড মেদিনীপুর জেলার দাঁতন থানার অন্তর্গত কোতাই গড়-তুরকা এস্টেটের জমিদার বংশের সন্তান রঞ্জন রায়। জন্ম পড়াশোনা ও বসবাস উত্তর কলকাতায়। বেথুন কলেজ থেকে বাংলা সাহিত্যে সাম্মানিক স্নাতক এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর উপাধি লাভ করেন। ১৯৭০ সালের ৩০ শে মে রঞ্জনা জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম স্বর্গত জগত কুমার পাল এবং মাতা স্বর্গত গীতা রানী পাল। রঞ্জনা উত্তরাধিকারসূত্রে বহন করছেন সাহিত্যপ্রীতি। তাঁর প্রপিতামহ স্বর্গীয় চৌধুরী রাধা গোবিন্দ পাল ঊনবিংশ শতকের শেষভাগে 'কুরু কলঙ্ক' এবং 'সমুদ্র মন্থন' নামে দুটি কাব্যগ্রন্থ রচনা করে বিদ্বজ্জন এর প্রশংসা লাভ করেছিলেন। ইতিপূর্বে রঞ্জনা রায়ের প্রথম কাব্যগ্রন্থ 'এই স্বচ্ছ পর্যটন' প্রকাশিত হয়েছে। তার দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ 'ট্রিগারে ঠেকানো এক নির্দয় আঙুল' সাহিত্যবোদ্ধাদের প্রশংসা পেয়েছে এবং তৃতীয় চতুর্থ কাব্যগ্রন্থ যথাক্রমে 'নিরালা মানবী ঘর' এবং 'ইচ্ছে ঘুড়ির স্বপ্ন উড়ান' দেজ পাবলিশার্স এর পরিবেশনায় প্রকাশিত হয়েছে। "ডোর বেল বেজে ওঠে" রঞ্জনার এই পঞ্চম কাব্যগ্রন্থটি প্রকাশিত হতে চলেছ। রঞ্জনা নিজে অর্যমা নামে একটি পত্রিকা সম্পাদনা করেন। বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া জার্মানি কানাডা ইংল্যান্ড বিভিন্ন বহির্বিশ্বের দেশেও তার কবিতা প্রকাশিত হয়ে চলেছে।

বছরের শেষ পূর্ণিমা

আজ এই বছরের শেষ পূর্ণিমা ফিনফিনে জ্যোৎস্নায় মোড়া শীতের কলকাতা। অসংখ্য মৃতদেহের ভারে বিমর্ষ এই বছর শেষ হবে- আগামীর অপেক্ষায় বসে আছি। মানুষ এখন নেই মানুষের পাশে যুদ্ধ হিংসার মোড়কে দুর্বিষহ একাকীত্ব। অজানা আতঙ্ক টুঁটি টিপে ধরে আশঙ্কায় পোড়ে জীবনের প্রহর। বিপন্ন অবসাদ বেলায় দিন কাটে রাত খোঁজে কয়েক টুকরো রুটি। পূর্ণিমার চাঁদে যেন অমাবস্যার…

Read More

ধনতেরাস

আজ কৃষ্ণা ত্রয়োদশী আজ ধনদেবী আর কুবেরের আরাধনার দিন আজ লোভ-লালসার প্রদীপে ঢেলেছি অনেকটা ঘি আগুন বুকে নিয়ে প্রদীপটা জ্বলতে থাকে। ঘি নিঃশেষিত তবু জ্বলতেই থাকে সেই প্রদীপ। লোভ বড় ভয়ানক ছিন্নভিন্ন তোলপাড় করে- হিংসার ঝড়- সব কেড়েকুড়ে নেয় এর তার তোমার আমার। যুদ্ধ যুদ্ধ যুদ্ধ-যুদ্ধের দামামা বাজে রাষ্ট্রনায়কের হাতে যুদ্ধের নৃশংস ট্রিগার কুম্ভীরাশ্রু-ছেলে ভুলানো…

Read More

কবিতা: প্রশ্ন

মাগো প্রতিবছর শরতের এই চারটি দিনে তুমি আসো আমাদের ভীষণ কাছাকাছি, খুশির মঙ্গল শঙ্খ বেজে ওঠে দশদিকে। শরত সাজিয়ে রাখে পদ্মের কলি তোমার ওই রক্তিম চরণের প্রান্তে। মহালয়ার তর্পণের মন্ত্রে বেজে ওঠে আগমনী দশমীর শেষ লগ্নে চলে যাও কৈলাস ভূমি। মাগো তোমারই তো প্রতিরূপ আমাদের প্রতিটি ঘরে ঘরে– তবু কেন এই দুর্গারা চির অবহেলা অনাদরে…

Read More

রাজা রামমোহন রায় ও ব্রাহ্মধর্মের রূপকল্পনা

ভারতবর্ষ তথা বাংলার ইতিহাসে ঊনবিংশ শতাব্দীর গুরুত্ব বিশেষভাবে অনুধাবনের যোগ্য। এই শতাব্দীতে বাংলা তথা ভারতবর্ষের সমগ্র অধিবাসীর জীবনে, চিন্তায়, মননে, আধ্যাত্মিকতায় এক বিরাট পরিবর্তন সূচিত হয়েছিল। ভারতব্যাপী এই বিরাট পরিবর্তনের প্রথম পদধ্বনি শোনা গিয়েছিল বাংলার মাটিতে। বিশেষত ইংরেজের রাজধানী শহর কলকাতার বুকে। ওয়ারেন্ট হেস্টিং এর সময় থেকেই কলকাতা ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির ঔপনিবেশিক রাষ্ট্র কাঠামোয় একটি…

Read More

বিদ্যাসাগর স্মরণে দুইটি কবিতা

পূর্ণ শশী বর্ষার দামোদর ভীষন খরস্রোতা ঈশ্বর সাঁতার কাটে তেজী একরোখা। ভগবতী জননী জীবনের ধ্রুবতারা মানব প্রেমে হৃদয়ে জাগে ঝর্ণাধারা। ভাষা বিজ্ঞানী- তিনি যে মহান “বর্ণপরিচয়” তার অমূল্য দান বাংলা অক্ষরমালার বর্ণচছটায় সরল শিশুমনে মুগ্ধতা জাগায়। যতিচিহ্নের সুকঠিন শাসন পথে বাংলাভাষা এগিয়ে চলে বিজয় রথে গল্প, প্রবন্ধ, অনুবাদ আর তর্ক-বিতর্ক বাংলাভাষা হয়ে ওঠে প্রজ্বলিত অর্ক।…

Read More

মৃত্যুশোক ও রবীন্দ্রনাথ

“আমি পরানের সাথে খেলিব আজিকে/মরণখেলা/নিশীথবেলা” (ঝুলন) আথবা “মরণ রে তুহু মম শ্যাম সমান” (ভানুসিংহের পদাবলী) মৃত্যু মানবজীবনের এই চিরন্তন সত্য ঘটনাটি রবীন্দ্রনাথ জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে নানাভাবে উপলব্ধি করেছেন। মৃত্যু যেমন তাঁর কাছে ভয়ংকর তেমনি মৃত্যু তাঁর মনে অমৃতের আভাষ এনে দেয়। “হে বিশ্ববিধাতঃ, আজ আমাদের সমস্ত বিষাদ-অবসাদ দূর করিয়া দাও- মৃত্যু সহসা যে যবনিকা অপসারণ…

Read More

বৃষ্টি

বৃষ্টি পড়ছে আমাদের গোপনীয়তা টুপটাপ বৃষ্টি হয়ে ঝরছে। পশ্চিম আকাশে লালচে মেঘ ঘুম ভাঙা ভালবাসার নেশা চূর্ণ চূর্ণ প্রেমের জলছবি। আমার তেতলার জানালায় উঁকি দেয় পেঁপে গাছ একদিন শিলাবৃষ্টিতে ক্ষতবিক্ষত হয়ে নুয়ে যায় তোমার নীলচে সানগ্লাসে উদ্ধত বিরাগ উত্তাপহীন অব্যয়ে ভালোবাসার উচ্চারণ। নিরুপায় আমি আর শূন্যতামাখা শব্দের বোঝা উটের মতো ঘন ক্লান্তিতে পথ চলি জলহীন…

Read More
error: বিষয়বস্তু সুরক্ষিত !!