সুবীর সরকার

সুবীর সরকার. জন্ম ৩ জানুয়ারি ১৯৭০. নয়ের দশকে লিখতে আসা এ কবি উত্তরের লোকজীবনের সাথে জড়িয়ে আছেন তীব্র ভাবে. ত্রিশ বছরের বেশী সময় ধরে কবিতা, গদ্য সহ বিভিন্ন ধারায় অনায়াস যাতায়াত করেছেন. বাংলা ভাষার প্রায় সব কাগজে নিয়মিত লেখালিখি করেছেন, করছেন. ১৯৯৬ সালে তাঁর প্রথম কবিতাবই প্রকাশিত হয় কবিতা পাক্ষিক থেকে. গুরুত্বপূর্ণ কবিতা ও গদ্যের বইগুলো- ধানবাড়ি গানবাড়ি, মাহুত বন্ধু রে, নির্বাচিত কবিতা, বিবাহ বাজনা, নাচঘর, উত্তরজনপদবৃত্তান্ত, মাতব্বর বৃত্তান্ত, ভাঙা সেতুর গান. পেশায় শিক্ষক এ কবি ভালোবাসেন রবিশস্যের খামার বাড়ি, সাদা ঘোড়া আর যৌথ যাপনে চাঁদের আলোয় কবিতা আড্ডা, লোকগানের আমেজ।

এই উত্তরদেশ, এই জোড়া মহিষের দেশ (অষ্টম পর্ব)

২২. যে হাট থেকে ফিরে গিয়েছিলেন আলাউদ্দিন এম এল এ সেই হাট থেকেই তো শুরু হতে পারে নুতন কোন গল্প। অথবা হাটের মধ্যে ঢুকে পড়তে পারে চিরকালের কোন আখ্যান। এটাই তো হয়ে থাকে। পুরোন গল্প সরে সরে যায়।নুতন গল্প ধল্লা নদীর বগা বগির কান্নার সুরে সুরে দুলে ওঠে। একটা পুরাতন পৃথিবী থেকে মরিচ ক্ষেতের মধ্য…

Read More

এই উত্তরদেশ, এই জোড়া মহিষের দেশ (সপ্তম পর্ব)

১৯. ‘ধওলি রে মোর মাই সুন্দরী মোর মাই দোনো জনে যুক্তি করি চল পলেয়া যাই’ গঙ্গাধরের পাড়ে পাড়ে চরে চরে সেই কত কত যুগ ধরে গোয়ালপাড়ার মেয়েরা এই গান তাদের কণ্ঠে তুলে নিয়ে কি এক হাহাকারের সুরে সুরে তাদের শরীরে নাচ জাগাতে জাগাতে জীবনের আবহমান এক আর্তি ছড়িয়ে দেয়। দূরের মাঠপ্রান্তরে তখন বিকেলশেষের মায়া। মায়ায়…

Read More

এই উত্তরদেশ, এই জোড়া মহিষের দেশ

।।সপ্তম পর্ব।। ১৯. ‘ধওলি রে মোর মাই সুন্দরী মোর মাই দোনো জনে যুক্তি করি চল পলেয়া যাই’ গঙ্গাধরের পাড়ে পাড়ে চরে চরে সেই কত কত যুগ ধরে গোয়ালপাড়ার মেয়েরা এই গান তাদের কণ্ঠে তুলে নিয়ে কি এক হাহাকারের সুরে সুরে তাদের শরীরে নাচ জাগাতে জাগাতে জীবনের আবহমান এক আর্তি ছড়িয়ে দেয়। দূরের মাঠপ্রান্তরে তখন বিকেলশেষের…

Read More

এই উত্তরদেশ, এই জোড়া মহিষের দেশ (ষষ্ঠ পর্ব)

১৬. তামারহাটের ভেঙে যাওয়া হাটের বাইরে আসতে আসতে সিকান্দার মিস্তিরি তার ঝাঁকড়া চুল নাড়াতে নাড়াতে বেশ মজাদার এক ভঙ্গি তার দীঘল শরীরে বহন করে আনতে থাকে আর কিঞ্চিৎ অন্যমনস্ক হয়েই গানের দু এক কলি কিংবা গেয়েই ওঠে- “ও কি মাহুত রে মোক ছাড়িয়া কেমনে যাইবেন তোমরা হস্তির শিকারে” এই গানের হাহাকারের মতন সুর বাতাসে ছড়িয়ে…

Read More

এই উত্তরদেশ, এই জোড়া মহিষের দেশ (পঞ্চম পর্ব)

১৩. আপাতত পুরোন সময়ের সমুদ্র থেকে তুলে আনা যাক কবেকার সেই সিকান্দার মিস্ত্রিকে। সিকান্দার ছিলেন গৌরীপুরের রাজা প্রভাত চন্দ্র বড়ুয়ার পাট হাতির মাহুত। হাতি শিকারের বা হাতি ধরবার কাজে গোয়ালপাড়া অঞ্চলে তিনি ছিলেন বিখ্যাত ফান্দি। লালজি রাজার “হাতি ধুরা” ক্যাম্পে জংলী হাতিকে পোষ মানানোর কাজে সিকান্দার ছিলেন পারদর্শী। তামারহাটের ভেঙে যাওয়া হাটের বাইরে আসতে আসতে…

Read More

এই উত্তর দেশ, এই বাওকুমটা বাতাসের দেশ (চতুর্থ পর্ব)

১০. চর কালপানি দিয়ে মন্থর লয়ে ছুটতে শুরু করে মজনু শাহের ঘোড়াটি।বাদামি কেশর। নিভৃত আর মায়াময় চক্ষুদ্বয়। মজনু তার এই ঘোড়াটি কিনেছিল ছত্রশালের হাটে। বিবি ফুলজান ঘোড়াটির নাম রেখেছে সুমি। এই ঘোড়া নিয়ে, ঘোড়ার গাড়ি নিয়ে ধান পাট তামাক নিয়ে এক হাট থেকে আরো আরো দূরে কাছের হাটগুলোতে ঘুরে বেড়ায় মজনু। মজনু শাহ।ভালো বাঁশি বাজাতে…

Read More

এই উত্তরদেশ, এই জোড়া মহিষের দেশ (তৃতীয় পর্ব)

৭. দূরের পৃথিবীতে তখন রোদের বিস্তার অনেকটা জায়মান বিস্তারের মতন।সেই রোদে ভেসে যাওয়া চরের ভেতর কি বিপুল এক শূন্যতা খেলা করে! শুন্যতার মধ্য দিয়ে ছুটে আসে আবহমান কাল ছুঁয়ে থাকা সেই জোড়া মহিষ। মিথ আর উপকথার গন্ধ লেগে থাকে তাদের শরীরময়। মহিষের শান্ত চোখের মায়ায় বুঝি মইশাল বন্ধুর স্মৃতি ছড়িয়ে পড়তে থাকে সম্পূর্ণ পরিসর জুড়ে।…

Read More

এই উত্তরদেশ, এই জোড়া মহিষের দেশ (দ্বিতীয় পর্ব)

চার. এই এই মাঠ প্রান্তর গহিন চরাঞ্চল জুড়ে কেবল গান আর গান। কোথাও অদৃশ্য বাদ্য ও বাজনার ঘোর। চরের অন্দরে কন্দরে এক চিরায়ত পৃথিবীর নবজন্ম হয়। মানুষের জন্ম মরন নিয়ে কি অদ্ভুত বেঁচে থাকা। বেঁচে থাকবার পরিসর জুড়ে জুড়ে জীবনের বহমান প্রবাহে শরীর ডুবিয়ে দেয় সেই কবেকার জোড়া মহিষ। তখন মাথায় বহুবর্ণ গামছা জড়িয়ে রূপকান্ত…

Read More

এই উত্তরদেশ, এই জোড়া মহিষের দেশ

রূপকান্ত তার দুই চোখ দিয়ে কেমন দূরাগত এক বিভ্রম কিংবা ভ্রম নিয়ে এই উত্তরদেশের উত্তর শিথানে প্রবাহিত নদীর দিকে তাকিয়ে ছিল। সে কি নদীজলপ্রবাহ দেখে আদতে কিঞ্চিৎ আনমনা হয়ে পড়ছিল! না কি তার দু চোখের ভেতরের অন্তর্গত কোন এক বিষন্নতা তাকে মরন আর জন্মের এক চিরায়ত ধানজমির পরিসরের বিস্তৃত এক বিস্তারের ভেতর ক্রমে তাড়িয়ে নিয়ে…

Read More

সরিষার ফুল যেমন রে, মোর বন্ধুর মায়া তেমন রে

।।এক।। তামারহাটের ভেঙে যাওয়া হাটের বাইরে আসতে আসতে সিকান্দার মিস্তিরি তার ঝাঁকড়া চুল নাড়াতে নাড়াতে বেশ মজাদার এক ভঙ্গি তার দীঘল শরীরে বহন করে আনতে থাকে আর কিঞ্চিৎ অন্যমনস্ক হয়েই গানের দু এক কলি কিংবা গেয়েই ওঠে– “ও কি মাহুত রে মোক ছাড়িয়া কেমনে যাইবেন তোমরা হস্তির শিকারে” এই গানের হাহাকারের মতন সুর বাতাসে ছড়িয়ে…

Read More

বিবাহ নাচের দেশ, নদী এলাজান ও গৌরীপুরিয়া মাহুত

১. মধ্যরাতের অন্ধকারে ছুটে চলেছে চন্দ্রকান্ত ধনীর শ্বেতবর্ন অশ্ব। বাতাস থম ধরে আছে। আকাশে চাঁদ স্তিমিত। কোন এক গানবাড়ি থেকে ফিরে আসছেন চন্দ্র ধনী। তিনি এলাজানের বিশাল বিস্তারের সামনে এসে ঘোড়া থেকে নামলেন। কি বিশাল এই নদী এলাজান! এলাজান বয়ে চলেছে। তার প্রবাহের পাশে পাশে কত কত গঞ্জ, বন্দর, গা গেরাম। এলাজান শালটিয়া হাউসের ডেরা…

Read More
error: বিষয়বস্তু সুরক্ষিত !!