কানাডার মন্ট্রিয়াল শহরে ‘অমর একুশে’ স্মরণ এবং ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হয়েছে।
গত ২৩ ফেব্রুয়ারী, স্থানীয় পার্ক ভিউ রিসেপশন হলে সন্ধ্যা ৫:৩০ মিনিটে Global Alliance Against Atrocity and Violence on Humanity আয়োজিত ‘একুশ আমার গর্ব, একুশ আমার অহংকার’ অনুষ্ঠানে ভাষা সৈনিকদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত এবং “আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো, একুশে ফেব্রুয়ারি আমি কি ভুলিতে পারি”- এই কালজয়ী গান পরিবেশনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা করা হয়।
প্রথম পর্বে আলোচনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির এক্সিকিউটিভ সদস্য, সোশ্যাল অ্যাক্টিভিস্ট ও সংগীত শিল্পী আলামিন বাবু এবং হিউস্টন টেক্সাস থেকে রাজনীতিবিদ ও সংগঠনের অন্যতম এক্সিকিউটিভ সদস্য নাহিদা নাসের। অনুষ্ঠানে সংগঠনটির সাফল্য কামনা করে শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করেন সি. বি. সিংহ। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ঘটে যাওয়া অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার উপর আলোকপাত করে বক্তব্য প্রদান করেন উইলিয়াম শ্লোন, সৈয়দ সাখাওয়াত, শরিফ উল্লাহ, মাইনুল ইসলাম, মুন্সি বশির এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মহিম। এরপরে আন্তর্জাতিক ও কেন্দ্রীয় কমিটির ঘোষণা করে বক্তব্য রাখেন নাহিদা নাসের। তিনি বিভিন্ন দেশে বসবাসরত এই আন্তর্জাতিক সংগঠনের সাথে যুক্ত সদস্যদের পরিচিতি তুলে ধরেন তার বক্তব্যে।
এরপরে অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে ভাষা আন্দোলনের পটভূমি নিয়ে আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে নাচ, গান ও আবৃতি পরিবেশন করেন নোবেল বড়ুয়া, প্রণব দাস, জুয়েল আহমেদ, দেবপ্রিয়াকর রুমা, আশা মনি, দিপান্বীতা মৎসুদ্দি, সপ্তর্ষি বড়ুয়া, অবন্তিকা বড়ুয়া, মেধা বড়ুয়া ও তৌফিকুর রহমান রাঙ্গা। সংগীত পরিচালনায় ছিলেন সংগীত শিল্পী আল আমিন বাবু। নৃত্য পরিচালনায় ছিলেন সাংস্কৃতিক সম্পাদিকা দীপান্বিতা মুৎসুদ্দি।
বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘু নির্যাতন, নারী ও শিশু ধর্ষণ, হত্যা, চুরি, ডাকাতি বহুগুণে বেড়ে গেছে। নিপীড়িত, নির্যাতিত সকল মানুষের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ও সংগঠনের প্রেসিডেন্ট ইশরাত আলম বলিষ্ঠ কণ্ঠে সংগঠনের নানা পরিকল্পনা বিষয় তুলে ধরে বলেন, আমরা সমাজে সমতা আনয়ন এবং লিঙ্গ বৈষম্যরোধে কাজ করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। প্রতিটি মানুষের নাগরিক অধিকার, আইনগত অধিকার ও মত প্রকাশের অধিকার নিশ্চিতের লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাবো।
তিনি আরও বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশে আজ সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নেই। ইউনুস রেজিম মানুষের বাক-স্বাধীনতা হরণ করেছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় অসত্য তথ্য ছড়িয়ে সাধারণ মানুষের ভেতরে ভীতি ও উত্তোজনা সৃষ্টি করছে তারা। এক শ্রেণীর ধর্ম ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়িয়ে ধর্মীয় সহিংসতা উসকে দিচ্ছে, ফলে ধমীয় সংখ্যালঘুরা নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। স্বাধীনতার সূতিকাগার এবং ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়িটি গুড়িয়ে দিতে উস্কানি দিয়েছে ফ্রান্স প্রবাসী ইউটিবার পিনাকী ভট্টাচার্য। আমরা তার বিরুদ্ধে ফ্রান্সের আইন অনুসারে মামলা করার উদ্যোগ নিয়েছি। বাংলাদেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ। বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত আমাদের ঐতিহ্য বাঙালি জাতীয়তাবাদ এই সব কিছুকেই অবমাননা করানোর একটি জোর চেষ্টা চলছে। গ্লোবাল এলাইয়েনস বাংলাদেশ সহ বিশ্বে যেখানে মানবতা লঙ্ঘন হচ্ছে আমরা আমাদের সাধ্যমত ভূমিকা রাখার চেষ্টা করব।এছাড়াও তিনি সংগঠনটির পাশে থেকে অনুষ্ঠানটি সফল করার জন্য সবাইকে কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
সবশেষে নৈশভোজের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানটির সমাপ্ত হয়।#




