সকালবেলার আলো এমনভাবে ভিজিয়ে দিচ্ছিল চোখ
আর্মহার্স্ট স্ট্রিটকেও সুন্দর দেখাচ্ছিল,
আর্মহার্স্ট স্ট্রিট এখন রামমোহন সরণি
সেই সরণির দু’পাশের গাছ
দুজনকে আলিঙ্গন করতে এতটাই উদগ্রীব-
যে এটাকে লাভার রাস্তা মনে হচ্ছে।
আসলে আমার মনটা এত ভালো করে দিয়েছো কদিন
আমার প্রিয় বিট্টুর মৃত্যু শোকও অল্প হাল্কা লাগছে
বহুদিন কোনও খুশির খবর নেই
কেউ এসে বলেনি,
এসো হাত ধরো, আলিঙ্গন করো
সবকিছু নিয়ে অপেক্ষা করছি তোমার জন্য
তবু ভালো লাগছে-
খুশিতে হাওয়ায় উড়িয়ে দিতে ইচ্ছে করে
সবুজ ঘাসের পালক।
আমি ভগৎ সিংকে দেখিনি।
আমি উধম সিংকে দেখিনি।
আমি মাস্টারদা সূর্য সেনকে দেখিনি।
আমি বড়লাট মেয়র হত্যাকারী
শহিদ শের আলী আফ্রিদিকে দেখি।
আমি আয়ারল্যান্ডের ববি স্যান্ডার্সকে দেখিনি।
ভিয়েতনামের নগুয়েন ভ্যান ত্রয়কে দেখি।
আমি শুধু তাদের সম্পর্কে পড়েছি
আর ভেবেছি-
তাঁদের মতো কি হতে পারতো না
অল্পে খুশি থাকা
চকচকে ব্লেডে দাড়িকাটা মধ্যবিত্ত জীবন!
ভগৎ সিং আর আমার পাশের এলাকার
বটুকেশ্বর দত্ত আইনসভার মধ্যে ঢুকে বলেছিলেন,
তানাশাহি নেহি চলেগি
দেশ লুঠ বন্ধ করো
গণতন্ত্র দাও মানুষকে
হিংসা থামাও।
ছড়িয়েছিলেন লিফলেট
বলেছিলেন, ইনকিলাব জিন্দাবাদ।
১৭৭০ মন্বন্তর ঘটিয়ে
এক কোটি মানুষকে না খাইয়ে মারা,
মোপলা বিদ্রোহ দমনের নামে
দশ হাজার মানুষকে জলে ডুবিয়ে খুন করা,
জালিয়ানওয়ালাবাগে গুলি চালিয়ে
হাজার হাজার মানুষকে হত্যাকারীর দল
ভগৎ সিংকে ফাঁসিতে চড়ায়।
আমি ভগৎ সিংকে দেখিনি
আমি ভগৎ সিংয়ের উত্তরসূরীদের দেখছি
আমি ভগৎ সিংয়ের ভাইদের দেখছি।
তাঁরা আজকের নতুন সাজানো গোছানো
আইনসভায় ঢুকে বলেছেন,
স্বৈরাচার নিপাত যাক
মণিপুরে হিংসা বন্ধ করো
জিনিসপত্রের দাম কমাও
বেকারদের কাজ দাও।
মিডিয়া তাদের উচ্চারিত শ্লোগান নিয়ে
একটা লাইনও খরচ করছে না
লিখছে না শ্লোগানের কথাগুলো
পাছে সরকার বিজ্ঞাপন বন্ধ করে দেয়
আর সরকার ব্রিটিশ আমলের মতোই বলছে,
ভগৎ সিংয়ের অনুরাগীরা রাজদ্রোহী।
আমি ভগৎ সিংয়ের উত্তরসূরীদের উদ্দেশ্যে
উড়িয়ে দিচ্ছি আমার হাজার চুমু
তোমরা শেখালে ভারত এখনও শীতঘুমে যায় নি
ভারত এখনও মরেনি
কেউ তাকে মেরে ফেলতেও পারবে না।

                        
                        
                        
                        
                        
                        
															


