বিভৎস উল্লাস
চারদিকে তুমুল নৈরাজ্য বিভৎস উল্লাসধ্বনি
কতিপয় মনুষ্য হায়েনা নির্লজ্জ ধর্ষকামে মত্ত
গাড়িভর্তি মেরুদণ্ডহীন যাত্রীরা কিছুই শোনেনি
বাঁচাও বাঁচাও চিৎকার, ধর্ষিতার চিৎকারে
কেঁপে উঠে সাত আসমানের আরশ আসন।
অসুস্থ মা হাসপাতালে মরণযন্ত্রনায় কাতর
ফেরারি সন্তানের অবুঝ মন মানে না
মা’কে একনজর দেখবার লোভ সামলাতে পারে না
কাতরাতে কাতরাতে মরণযাত্রী মা ডাকে
অপুত তুই হড়ে অপুত আছে না অপুত
সালাউদ্দিনের কলব কেঁদে উঠে মায়ের ডাকে
চুপিসারে আসে আল ফুয়াদ হাসপাতালে
কতৃপক্ষ অলক্ষ্যে পুলিশ ডেকে হাতকড়া পরায়
দাউদাউ জ্বলছে ধানমণ্ডির বত্রিশ নম্বর
পুড়ে ছারখার বাঙালির প্রাগৈতিহাসিক স্মৃতি ভাস্বর
সীমারেরা দলবেঁধে ঝাপিয়ে পড়ে অশ্রুসজল ভক্তিমাতার উপর
শিয়াল – কুকুরের মতো ছিঁড়েখুঁড়ে রক্তাক্ত করে জননী- জায়াকে
নিম্নবিত্ত পরিবারের স্বপ্নবিলাসী মা স্বপ্ন দেখে
সন্তান তার পড়ালেখায় শিক্ষিত হয়ে ঘোচাবে
একান্নবর্তী সংসারের দারিদ্র কিন্তু
একবিংশ শতাব্দীর এ-ই ক্রান্তিলগ্নে
মরণ উৎসব
বসন্তভোরে বাউরি বাতাসে উড়ে বিগত রাতের অগ্নিকনা
ভেজা ছাইয়ের ধুলো ঝড়ে পুষ্পিতার মলিন মুখের কান্না
চারদিকে বিভৎস বাৎসায়নের বুনো উল্লাসে ঝরে যায় মাধবী
রক্তজবা কে দুমড়েমুচড়ে দেয় টুপটুপ ঝরে লোহিত স্রোত
চনমন তনুমনে চুপচাপ রাতে ঘিরে থাকে ভয়ার্থতার উৎপাত
এমন দুর্বিষহ দিনাতিপাতে মানুষের জীবন এখন মরণ উৎসব।
স্মৃতির কাশবন
বাড়ির ধারে নদী মাতামুহুরী
নদীর পাড়ে পাথরের বাঁধ
নদী পায়ে দিঘল চরের বেড়ি
শরতে কাশফুল ফোটে আর
নীলাকাশ শাদা
আমরা পাড়ার দুষ্টু ছেলের দল নদীর জলে অবাধ সাঁতার
কাশবনে কানামাছি খেলা
কাশকাটি ঝাড়ুফুল
মা-বোনেরা কাঁচা কাশকাটি দিয়ে ঝাড়ু দেয় ঘরদোর, উঠান
কাশফুল শিমুলের তুলার মতো বাতাসে ওড়ে
কাশবনে লুককেলান্তি খেলে
আমাদের সারাদেহ শাদা
আমরা বেখেয়াল
নদীর বুকে ডুবসাঁতার
শাদাশুভ্র তুলা ঘষতাম শরীরে
শরতের আনন্দে মেতে থাকতাম
হায় কাশবন!
তোমার ওপর আজ এ কেমন গজব!
তুমি পেলে ধর্মবর্ণের পরিচয়
পোড়ানো হলো তোমাকে
কত পাখির নীড় পুড়ে গেল
ছানা আর ডিম পুড়ে গেল তবু
তাদের হৃদয় কাঁপল না।




