সিদ্ধার্থ সিংহ

সিদ্ধার্থ সিংহ আশির দশকের অত্যন্ত জনপ্রিয় সব্যসাচী লেখক। ২০২০ সালে 'সাহিত্য সম্রাট' এবং ২০১২ সালে 'বঙ্গ শিরোমণি' সম্মানে ভূষিত হন। জন্ম কলকাতায়। ক্লাস নাইনে পড়ার সময়ই তাঁর প্রথম কবিতা ছাপা হয় 'দেশ' পত্রিকায়। বড়দের এবং ছোটদের জন্য লেখেন কবিতা, ছড়া, গল্প, উপন্যাস, নাটক, প্রবন্ধ এবং মুক্তগদ্য। তাঁর লেখা পাঠ্য হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদে। আইসিএসসি এবং সিবিএসসি বোর্ডে। বানিয়েছেন দু'টি তথ্যচিত্র। লিখেছেন বেশ কয়েকটি ছায়াছবির চিত্রনাট্য। তাঁর গল্প নিয়েও সিনেমা হয়েছে বেশ কয়েকটি। এক সময় আনন্দবাজার সংস্থায় নিয়মিত মডেলিংয়ের কাজও করেছেন। এখন পর্যন্ত প্রকাশিত হয়েছে তিনশো ষোলোটি বই। এ ছাড়াও অনুবাদ করেছেন বেশ কয়েকটি। প্রবর্তন করেছেন 'রতিছন্দ', 'রিয়্যালিটি উপন্যাস' এবং 'ঝলক-গল্প'র। পেশায় সাংবাদিক এই কথাসাহিত্যিক একক ছাড়াও, যুগ্ম  ভাবে সম্পাদনা করেছেন লীলা মজুমদার, রমাপদ চৌধুরী, নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী, মহাশ্বেতা দেবী, শংকর, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়, সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়, সুচিত্রা ভট্টাচার্য, নবনীতা দেবসেন, রঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়, অরুণ কুমার চক্রবর্তী, শুভঙ্কর সিংহের সঙ্গে প্রায় সাতশোর কাছাকাছি সংকলন। পেয়েছেন অজস্র পুরস্কার।

ধারাবাহিক উপন্যাস ‘উত্তাল’ ২১

।। পর্ব – একুশ।। এত জায়গা থেকে এত নামী-দামি লোক আঁধারগ্রামে এসে খোঁজখবর নিয়ে যাচ্ছে, অথচ যে-লোকটা তাদের ওই অসহায়তা, মুখ-বন্ধ করে সরকারি এবং সরকারি মদতপুষ্ট কিছু দানবের তাণ্ডব সহ্য করা, পড়ে পড়ে মার খাওয়াটাকে সহ্য করতে না পেরে এগিয়ে এসেছিল, প্রতিবাদ করার শক্তি জুগিয়েছিল, পুরো ব্যাপারটাকে একটা আন্দোলনের চেহারা দিয়েছিল, আর পাঁচ জনের কাছে…

Read More

ধারাবাহিক উপন্যাস ‘উত্তাল’ ২০

।। পর্ব – কুড়ি ।। কৌশিক সেন, জয়া মিত্র, ব্রাত্য বসু, অর্পিতা ঘোষ, সমীর আইচ, জয় গোস্বামী, দোলা সেনদের ধুধু মাঠের ভিতর দিয়ে দোবাঁদি গ্রামে নিয়ে এলেন রাজকুমার ভুল। ও গোপালনগরে থাকলেও ওকে এখানকার সবাই চেনেন। এই গ্রামে এক ঘর বাগদি ছাড়া সবাই বাউরি সম্প্রদায়ের। কারও পদবি পাত্র, মৈত্রী, দাস খামারু, হারারি। কারও কোটাল, বাগাল,…

Read More

ধারাবাহিক উপন্যাস উত্তাল ১৯

।।পর্ব – উনিশ।। শুভাপ্রসন্ন, চৈতালী ঘোষ, প্রসূন ভৌমিক, দেবব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়দের পথ দেখিয়ে বেড়াবেড়ির পূর্বপাড়ায় নিয়ে এলেন এই গ্রামেরই দীর্ঘ দিনের বাসিন্দা হরিচরণ। আসার পথে তাঁর মুখেই ওঁরা শুনলেন, দোবাঁদি বা রুইদাসপাড়ার তুলনায় এই পূর্বপাড়াটা একটু বর্ধিষ্ণু। এখানে একশো পঞ্চান্ন থেকে একশো ষাট ঘর মানুষ বাস করেন। তার মধ্যে এক ঘর কেবল তফসিলি, বাকিরা মাহিষ্য। গ্রামসভার…

Read More

ধারাবাহিক উপন্যাস উত্তাল ১৮

।।পর্ব – ১৮।। আঁধারগ্রাম নিয়ে যাঁরা বিচলিত, সরকারের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই যাঁরা মুখ খুলতে শুরু করেছেন এবং যাঁরা এক্ষুনি এই অবস্থার অবসান চান, তাঁরা এক ছাতার নীচে এসে জড়ো হয়েছেন। সেখানে যেমন আছেন কবি, লেখক, শিল্পী, নাট্যকার, অভিনেতা, অধ্যাপক, সমাজসেবী, তেমনি আছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারাও। একদিন দুপুরবেলায় ধর্মতলার মোড় থেকে কয়েকটি ম্যাটাডরে চেপে তাঁরা…

Read More

ধারাবাহিক উপন্যাস উত্তাল ১৭

।।পর্ব- সতেরো।। সমস্ত রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি দেওয়া হবে প্রতিশ্রুতি দিয়ে ১৯৭৭ সালে ক্ষমতায় এসেছিল জ্যোতি বসুর সরকার। আসার কিছু দিন পরেই তারা বলেছিল, সমস্ত রাজনৈতিক বন্দিদের আমরা ছেড়ে দিয়েছি। কিন্তু সত্যিই কি ছেড়ে দিয়েছে? এটা হয়তো কারও কারও মনে হয়েছিল। কারণ, যাঁরা বন্দি ছিলেন, তাঁরা কেউই বাক্ চাতুর্যে এবং জনমোহিনী আকর্ষণে কারও চেয়ে একচুলও কম…

Read More

ধারাবাহিক উপন্যাস উত্তাল ১৬

।।পর্ব – ষোল।। শুধু বড়রাই নয়, বাবা-মায়েদের মুখের দিকে আর তাকানো যাচ্ছে না দেখে আঁধারগ্রাম কৃষিজমি বাঁচাও কমিটিতে এসে একে একে নিজেদের নাম লেখাতে শুরু করল গ্রামের তরুণ-তরুণীরাও। এইট-নাইনে পড়া ছেলেমেয়েরাও বাদ গেল না। প্রাইমারি স্কুলে পড়া ক’টা ছেলেও নাকি তাদের নাম লেখানোর জন্য কাকে ধরাধরি করেছিল। শেষ পর্যন্ত তাদের নাম না লেখানোয় তাদের সে…

Read More

শ্বশুরবাড়ির জামাই আদর

চরিত্র অর্কাংশু, তিস্তা, শাশুড়ি, শ্বশুর, রীঝা, প্রথম বাচ্চা, দ্বিতীয় বাচ্চা ও বড় মেয়ে। (জোরে টিভি চলছে) অর্কাংশু : এগুলি কাল রাতে গুছিয়ে রাখতে পারোনি? তিস্তা : গোছাবার কী আছে? যাচ্ছি তো এক বেলার জন্য। তোমার একটা চোস্তা-পাঞ্জাবি, আমার একটা শাড়ি আর রীঝার দুটো জামাপ্যান্ট, ব্যাস। অর্কাংশু : বলছ তো এই ক’টা। কিন্তু গোছাচ্ছ তো সেই…

Read More

ধারাবাহিক উপন্যাস উত্তাল ১৫

ও দিক থেকে মহাশ্বেতা দেবী প্রশ্ন করলেন, তুমি এ সব জানলে কী করে? নবীন মাস্টার বললেন, আপনাকে বলেছিলাম না… আমাদের বাড়িতে একটা ছেলে থাকে। আঁধারগ্রাম থেকে এসেছে। সেই তেরো নম্বরই তো আমাকে সব বলেছে। – তেরো নম্বর! সেটা আবার কী? – ওটাই তো ওর নাম। – এ রকম আবার কারও নাম হয় নাকি? – না,…

Read More

ধারাবাহিক উপন্যাস ‘উত্তাল’ ১৪

।।চৌদ্দ।। নবীন মাস্টারের হঠাৎ মনে পড়ে গেল মহাশ্বেতা দেবীর নাম। উনি ওঁদের ত্রৈমাসিক নাট্যপত্রের উপদেষ্টা। যে কোনও বিষয় নিয়ে ওঁর সঙ্গে আলোচনা করা যায়। বিখ্যাত লেখিকা হলেও, মানুষ হিসেবে উনি আরও বড়। লোধাদের নিয়ে যে কাজ করছেন, তা আজ কিংবদন্তিতে পরিণত হয়েছে। পিছিয়ে পড়া, হেরে যাওয়া, অচ্ছুৎ, অবাঞ্ছিত মানুষদের নিজের পায়ে দাঁড় করানোর জন্য উনি…

Read More

পনেরো বছর আগের সেই ‘আয়লা’র স্মৃতি

হ্যাঁ, পনেরো বছর। আজ থেকে ঠিক পনেরো বছর আগে এমনই এক মে মাসের ২১ তারিখে উত্তর ভারত মহাসাগরে জন্ম নিয়েছিল অত্যন্ত ভয়াবহ দ্বিতীয় ঘূর্ণিঝড়— আয়লা। অবশেষে সমুদ্র উপকূলে সেটা আছড়ে পড়ে। সেই দিনটা ছিল ২৫ মে, ২০০৯ সাল। তখন মধ্য দুপুর। দিনের বেলাতেই নেমে আসে রাতের চেয়েও নিকষ অন্ধকার। ভয়ঙ্কর সেই দুর্যোগ এতটাই তাণ্ডব শুরু…

Read More

সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ ১০ নম্বর বাঙালি রাজা রামমোহন রায়

দু’হাজার চার সালে বিবিসি বাংলা একটি ‘শ্রোতা জরিপ’-এর আয়োজন করে। মানে শ্রোতাদের বিচারে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি কে? তিরিশ দিনেরও বেশি সময় ধরে চালানো সেই সমীক্ষায় শ্রোতাদের ভোটে নির্বাচিত শ্রেষ্ঠ ২০ জনের জীবন নিয়ে ২০০৪-এর ২৬শে মার্চ থেকে ১৫ই এপ্রিল পর্যন্ত একটানা কুড়ি দিন ধরে বিবিসি বাংলায় বেতার অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়। টিআরপির বিচারে যেটার শ্রোতার সংখ্যা…

Read More

ধারাবাহিক উপন্যাস ‘উত্তাল’ ১৩

এক সময় কারও জমি পছন্দ হলেই, জমিদাররা হয় লেঠেল পাঠিয়ে সে জমি কেড়ে নিত, নয়তো নানা রকম ফন্দিফিকির করে তাকে ফাঁদে ফেলে এমন নাস্তানাবুদ করত যে, জমির মালিক ‘ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি’ বলে, জমিজমা সব ছেড়েছুড়ে পালাত। ইংরেজদেরও কোনও জায়গা পছন্দ হলে, সেখানে যে-ই থাকুক না কেন, তাকে রাতারাতি উচ্ছেদ করে সেখানে থাবা বসাত।…

Read More
error: বিষয়বস্তু সুরক্ষিত !!