বিংশ শতাব্দীর লাতিন আমেরিকান সাহিত্যের অন্যতম পুরোধা কবি অক্টাভিও পাজ লোজানো। তিনি জাতিতে- মেক্সিকান। পেশায় – লেখক, কবি, কূটনীতিবিদ (সাহিত্য আন্দোলন – পরাবাস্তবতাবাদ, এক্সিস্টেনশিয়ালিজম)।
বাঙালী পাঠক ও কবিদের কাছে ‘কবি অক্টাভিও পাজ লোজানো’ কবি হিসাবে খুব একটা পরিচিত নাম নয়। অনেকেই তাঁর সম্পর্কে বেশী কিছু জানেন না । যারা জানেন না তাদের কথা ভেবেই, এই নিবন্ধের সূত্রপাত।
তাঁর সৃষ্টিশীল সময়কাল – ১৯৩১ সাল থেকে -১৯৬৫ সাল পর্যন্ত।
অক্টাভিও পাজ সলোরজানো ও জোসেফিনা লোজানো দম্পতির ঘরে ৩১শে মার্চ ১৯১৪ সালে জন্ম গ্রহণ করেন মেক্সিকো সিটি, মেক্সিকোতে।
তার বাবা তৎকালীন ডায়াজ শাসনতন্ত্রের বিরোধী বিপ্লবের সক্রিয় সমর্থক ছিলেন। মিক্সিকোয়াক নামক গ্রামে মা জোসেফিনা, খালা এমেলিয়া পাজ ও দাদা ইরিনিও পাজের তত্ত্বাবধানে অক্টাভিও পাজ বেড়ে ওঠেন। তার দাদা ছিলেন একজন স্বাধীনচেতা বুদ্ধিজীবী, ঔপন্যাসিক ও প্রকাশক।
তাঁর আরেকটি উল্লেখযোগ্য পরিচয় হল তিনি এককালে প্রেসিডেন্ট পোরফিরিও ডায়াজের সমর্থক ছিলেন। পাজের পরিবার মেক্সিকান বিপ্লবের নেতা এমিলিয়ানো জাপাতার প্রকাশ্য সমর্থক ছিলেন। জাপাতা নিহত হওয়ার পর পাজের পরিবার যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাসনে যেতে বাধ্য হয়।
অক্টাভিও পাজ লোজানো উইলিয়ামস নামক একটি বেসরকারী স্কুলে পড়াশোনা করেন। পাজ অল্প বয়সেই তার পিতামহের মেক্সিকান ও ইউরোপীয় সাহিত্য সমৃদ্ধ লাইব্রেরির মাধ্যমে সাহিত্য জগতের সাথে পরিচিতি লাভ করেন।
১৯২০-এর দশকে পাজ ইউরোপীয়ান কবি জেরারদো ডিয়োগো, রোয়ান রেমন জিমেনেজ এবং এন্তোনিও মাচোদা প্রমুখের কবিতার সাথে পরিচিত লাভ করেন। পাজের প্রারম্ভিক সাহিত্যে স্প্যানিশ লেখক আন্তোনিও মাচোদার প্রভাব গভীরভাবে লক্ষ্য করা যায়।
১৯৩১ সালে ডি এইচ লরেন্স অণুপ্রাণীত কিশোর পাজ ক্যাবেরেল্লা সহ তার প্রথম জীবনের কিছু কবিতা প্রকাশ করেন। দুই বছর পরে, উনিশ বছর বয়সে পাজ তার কবিতা সংগ্রহ লুনা সিল্ভেস্টার (বুনো চাঁদ) প্রকাশ করেন।
১৯৩৯ সালে পাজ নিজেকে প্রধানতঃ কবি হিসেবে পরিচতি লাভ করতে শুরু করেন।
১৯৩৫ সালে পাজ তার আইন শিক্ষা ছেড়ে দেন। তিনি মেক্সিকোর অন্যতম প্রদেশ ইউকাতানের রাজধানী মেরিদায় চলে যান এবং সেখানে দরিদ্র কৃষক ও শ্রমিকদের ছেলে মেয়েদের শিক্ষকতার কাজে আত্মনিয়োগ করেন। সে’সময়ই তিনি তার দীর্ঘ কবিতাগুলো, যেমন- বিটুইন দি স্টোন এন্ড দি ফ্লাওয়ার লিখতে শুরু করেন। বিটুইন দি স্টোন এন্ড দি ফ্লাওয়ার কবিতায় তিনি এক লোভী জোতদারের কবলে নিষ্পেষিত এক কৃষকের চিত্রকল্প এঁকেছেন শব্দে-চিত্রে। তাঁর এ সময়ের কবিতাগুলো টি এস এলিয়ট দ্বারা প্রভাবিত।
১৯৩৭ সালে মেক্সিকোতে(মাদ্রিদ, স্পেন) যখন গৃহযুদ্ধ চলছিল,অক্টাভিও পাজ তখন স্পেনে অনুষ্ঠেয় দ্বিতীয় সংস্কৃতি রক্ষা আন্তর্জাতিক লেখক সম্মেলনে আমন্ত্রণ পান। সেই সম্মেলনে পাজ রিপাবলিকানদের সাথে সংহতি প্রকাশ করেন এবং ফ্যাসীবাদের বিরোধিতা করেন। স্পেন থেকে মেক্সিকোতে ফেরার পর ১৯৩৮ সালে পাজ টলার (“প্রশিক্ষণশালা”) নামে একটি সাহিত্য সাময়িকী প্রকাশ করেন। ১৯৪১ সাল পর্যন্ত তিনি এই সাময়িকীতে লিখেছিলেন। ১৯৩৮ সালেই পাজ, এলোনা গ্যারো নামে এক তরুণীর সঙ্গে পরিচিত হোন এবং সে বছরই তারা বিয়ে করেন। বর্তমানে এলিনা গ্যারো মেক্সিকোর প্রথমসারির একজন লেখিকা। হেলেনা নামে তাদের একটি কন্যা সন্তান ছিল। পরবর্তিতে, ১৯৫৯ সালে তাদের মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে।
১৯৪৩ সালে পাজ গাগেনহেইম নামক একটি ফেলোশিপ পান এবং যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়ার বার্কলে তে পড়াশোনা শুরু করেন। দুই বছর পর তিনি মেক্সিকোর কূটনৈতিক সংস্থায় চাকুরি গ্রহণ করেন এবং কিছুদিনের জন্য নিউইউর্কে কর্মরত থাকেন। ১৯৪৫ সালে পাজ ফ্রান্সে বদলি হোন। সেখানেই তিনি রচনা করেন মেক্সিকান আত্মপরিচয় ও চিন্তা নিয়ে ‘এল ল্যাবিরিন্তো দে লা সোলেদাদ’ (একাকীত্বের গোলকধাঁধা)-নামক অনুসন্ধানমূলক নয়টি বৈপ্লবিক প্রবন্ধ। ১৯৫২ সালে পাজ প্রথম বারের মত ভারত ভ্রমণে আসেন। একই বছর তিনি সংস্থার কাজে টোকিওতে এবং পরে জেনেভায় যান। ১৯৫৪ খ্রীষ্টাব্দে তিনি মেক্সিকো সিটিতে ফিরে আসেন। মেক্সিকো সিটিতেই ১৯৫৭ সালে তিনি তাঁর মহান কবিতা ‘পিয়েরদা দি সল’ (সূর্যপাথর) লেখেন। একই বছর বের হয় তাঁর কবিতা সংকলন ‘লিবারতাদ বাজো প্যালাব্রা'(মুক্তির শপথ)। ১৯৫৯ সালে সংস্থার কাজে আবার প্যারিসে যান। ১৯৬২ সালে মেক্সিকোর রাষ্ট্রদূত হিসেবে আবার ভারতে আসেন।
ভারতে থাকাকালীন সময়ে পাজ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ সমাধা করেন। এর মধ্যে ‘এল মনো গ্রামাতিকো’ (বাঁদর ব্যাকরণবিদ) এবং ‘লাদেরা এস্তে’ (পূর্বের ঢাল) অন্যতম। ভারতে থাকাকালীন পাজ এখানকার ‘হাংরি জেনারেশন’ (ক্ষুধার্ত প্রজন্ম) নামক লেখকগোষ্ঠীর সাথে পরিচিত হোন এবং ভারতে থাকাকালীন অবস্থায় ‘হাংরি জেনারশন'(ক্ষুধার্ত প্রজন্ম) আন্দোলনের কবিগোষ্ঠীদের ৩৫ মাসের দীর্ঘ বিচার চলাকালীন সময়ে প্রভূত সাহায্য করেন এবং তাদের উপর প্রভূত প্রভাব বিস্তার করেন।
১৯৬৩ সালে তাঁর ফরাসী বান্ধবী বোনার সাথে তার বিচ্ছেদ ঘটে। একই বছর মেরী হোসে ত্রামিনি নামের আরেক ফরাসী রমণীর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হোন। জীবনের বাকী সময়টুকু পাজ মেরীর সাথেই কাটিয়েছেন।
১৯৬৮ সালে ত্লাতেলোকো এর প্লাজা দি লাস ত্রেস কালতুরাস নামক চত্ত্বরে সরকারি আদেশে প্রতিবাদী ছাত্রজনতা হত্যার ঘটনার প্রতিবাদে পাজ কূটনীতিবিদের চাকরি থেকে ইস্তফা দেন। এরপর কিছুদিনের জন্য প্যারিসে চলে যান এবং পরের বছরই মেক্সিকো ফিরে আসেন। এ সময় পাজ কিছু স্বাধীনচেতা মেক্সিকান লাতিন আমেরিকান লেখককে সাথে নিয়ে প্লুরাল(১৯৭০-১৯৭৫) নামক ম্যাগাজিন পত্রিকা বের করেন। ১৯৭০ সাল থেকে ১৯৭৪ সাল পর্যন্ত পাজ হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে চার্লস এলিয়ট নর্টন অধ্যাপক হিসেবে অধ্যাপনা করেন। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যলয়ে সে সময়ে দেয়া লেকচার থেকেই জন্ম নেয় তার আরেকটি কীর্তি ‘লস ইহোস দেল লিমো’ (কর্দমার শিশু)।
১৯৭৫ সালে মেক্সিকান সরকার তা বন্ধ করে দেয়। সে’বছরই পাজ, বুলেতা নামক আরেকটি প্রকাশনা বের করেন। বুলেতা এর ভাবাদর্শ প্লুরাল এর অনুগামী থেকে যায়। মৃত্যুর আগে পর্যন্ত পাজ এই প্রকাশনার সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। সাহিত্যে ব্যক্তিস্বাধীনতার আবেদন উপজীব্য হবার কারণে ১৯৭৭ সালে পাজ সাহিত্যে জেরুজালেম পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৮০ সালে পাজ হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৮২ সালে তিনি নিউতস্তাদত পুরস্কার পান। ১৯৯০ সাল ১৯৫৭ থেকে ১৯৮৭ সাল পর্যন্ত লিখিত কবিতাগুলোর একটি সংকলন বের হয়। ১৯৯০ সালেই পাজ নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হন।
তিনি ১৯শে এপ্রিল,১৯৯৮ সালে ( ৮৪ বছর বয়সে) ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।
অক্টাভিও পাজ ছিলেন বহুপ্রজ লেখক ও কবি। তাঁর সৃষ্টিকর্মগুলোর অধিকাংশই পৃথিবীর অনেক ভাষায় অনূদিত হয়েছে। উদাহরণ স্বরূপ, তাঁর কবিতা ইংরেজি ভাষায় অনুবাদ করেছেন স্যামুয়েল ব্যাকেট, চার্লস টমলিসন, এলিজাবেথ বিশপ, মুরিএল রুকেসার এবং মার্ক স্ট্র্যান্ড। তাঁর প্রথম দিককার কবিতা মার্ক্সবাদ, পরাবাস্তবতা ও অস্বিত্ববাদী দর্শন দিয়ে প্রভাবিত ছিল। কিছু কিছু ধর্ম, যেমন হিন্দু ধর্ম ও বৌদ্ধ ধর্মের দর্শনও তাঁর প্রথম দিককার কবিতায় প্রভাব বিস্তার করেছিল। তার লেখা “সূর্যপাথর” কবিতাটিকে পরাবাস্তবতাবাদী কবিতার একটি উল্ল্যেখযোগ্য উদাহরণ হিসেবে তাঁর নোবেল পুরস্কার প্রাপ্তির অনুষ্ঠানে প্রশংসিত হয়। পরবর্তী সময়ে তাঁর কবিতার প্রধান উপজীব্য ছিল ভালবাসা ও কাম, সময়ের প্রকৃতি ও বৌদ্ধিক দর্শন। আধুনিক চিত্রকলার প্রতি পাজের অনুরাগ ছিল, যা নিয়ে তাঁর কিছু কবিতা দেখা যায়। তিনি তাঁর বেশকিছু কবিতা বালথুস, জ়োয়ান মাইরো, মার্সেল ডাচহ্যাম্প, এন্টোনি টাপিএস, রবার্ট রাশ্চেনবার্গ এবং রবার্টো মারিও প্রমুখের সৃষ্টিকর্মের প্রতি উৎসর্গ করেন।
একজন প্রবন্ধকার হিসেবে পাজ মেক্সিক্যান রাজনীতি ও অর্থনীতি, আজটেক শিল্প, নৃতত্ত্ববিদ্যা ও যৌনতা বিষয়ে বিভিন্ন প্রবন্ধ লিখেছেন।
তাঁর সুদীর্ঘ প্রবন্ধসংগ্রহ “একাকীত্বের গোলকধাঁধা” তে তিনি তার দেশের জনগনের মনের গভীরে অনুসন্ধান চালিয়েছেন এবং সেই সব মনকে একাকীত্বের মুখোশের পেছনে হারিয়ে যাওয়া মন বলে বর্ণনা করেছেন। ঐতিহাসিক বাস্তবতায় হয় মেক্সিকানদের আত্মপরিচয় প্রাক কলম্বিয়ান ও স্প্যানিশ সংস্কৃতির মাঝামাঝি জায়গায় হারিয়ে গেছে, না হয় সেটা ক্ষয়িষ্ণু। “একাকীত্বের গোলকধাঁধা”, মেক্সিকান সংস্কৃতি অণুধাবনের প্রধান উৎস, যা আরো কিছু মেক্সিকান লেখক যেমন কার্লোস ফুয়েন্তেসকে প্রভাবিত করেছে। ইলান স্ট্যাভান্স এর মতে পাজ হলেন – একজন আত্মপ্রতিমূর্তির জরিপকারী, একজন দান্তের ভার্জিল, একজন রেঁনেসা-পুরুষ।
১৯৫৬ সালে পাজ ‘লা ইহা দে রাপ্পাচিনো’ নামক একটি নাটক লেখেন। নাটকটির আঙ্গিক গড়ে উঠেছে অধ্যাপক রাপ্পাচিনোর মনোরম বাগানের প্রতি একজন ইতালীয় ছাত্রের ঘোরাঘুরিকে কেন্দ্র করে, যেখানে ছাত্রটি গোপনে আধ্যাপকের অসাধারণ সুন্দরী কন্যা বিট্রেস এর প্রতি গোপনে লক্ষ্য রাখত। একসময় ছাত্রটি বাগানের সৌন্দর্যের বিষাক্ত প্রকৃতি জেনে আতঙ্কিত হয়ে পড়ে।
তাঁর অন্যান্য সৃষ্টিকর্মগুলো হলো:
১) এগুলিয়া ও সোল (১৯৫১),
২) লা এস্তাসিয়োন বিওলেন্তা (১৯৫৬),
৩) পিয়েদ্রা দে সল(১৯৫৭)।
ইংরেজি ভাষায় অনূদিত তার কবিতা সংকলনগুলো হল:
১) আর্লি পোয়েমস (১৯৩৫-১৯৫৫) (১৯৭৪)
২) কালক্টেড পোয়েমস (১৯৫৭-১৯৮৭) (১৯৮৭)।
তাঁর প্রাপ্তপুরস্কার:
১) সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার
২) Peace Prize of the German Book Trade
৩) সারভেন্তেস পুরস্কার
৪) জাতীয় সাহিত্য পুরস্কার (মেক্সিকো)
৫) প্রেমিও মন্দেল্লো (পালেমো, ইতালি)
৬) আলফন্সো রীয পুরস্কার
৭) Neustadt International Prize for Literature
৮) জেরুযালেম পুরস্কার
৯) Menendez y Pelayo Prize
১০) Alexis de Tocqueville Prize
১১) Xavier Villaurrutia Award
১২) হার্ভাড বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানসূচক ডক্টরেট
১৩) মেক্সিকোর ন্যাশনাল অটোনমাস ইউনিভার্সিটি প্রদত্ত সম্মানসূচক ডক্টরেট।
তাঁর মৃত্যু হয় ১৯শে এপ্রিল, ১৯৯৮ সালে (বয়স ৮৪) (মেক্সিকো সিটি, মেক্সিকো)।
তাঁর তিনটি কবিতা এখানে দেওয়া হল –
(১)
সৌভ্রাতৃত্ব
একজন মানুষ হিসেবে আমার অস্তিত্ব আর কতটুকু
কিন্তু রাত্রি অসীম।
ওপরে তাকিয়ে দেখি
তারকালিখিত এক পৃষ্ঠা।
জানা নেই কিন্তু মনে হল
আমিও লিখিত এভাবে
এবং ঠিক সেই মুহূর্তেই
কেউ একজন আমায় লিখে উঠল।
(২)
একটি অন্তর্গত বৃক্ষ
আমার মস্তিষ্কের ভেতর একটি বৃক্ষ বেড়ে ওঠে।
একটি অন্তর্গত বৃক্ষ বেড়ে ওঠে।
এর শেকড়গুলো শিরা,
শাখা-প্রশাখা স্নায়ু,
ঘন পত্রসমষ্টি এর ভাবনা।
তুমি তাকালেই তাতে আগুন লাগে;
রক্ত-কমলা
এবং
অগ্নিশিখার ডালিম
এর ছায়াফল।
দেহের রাতে
দিনের আলো ফোটে।
সেখানে, আমার মস্তিষ্কের ভেতরে
বৃক্ষ কথা বলে।
আরো কাছে আসো– তুমি কি সেকথা শুনতে পাচ্ছো?
(৩)
মেক্সিকোর গান
আমার দাদা কফি খেতে খেতে
গল্প করতেন– হুয়ারেজ আর পোরফিরিও,
জুয়াভ বাহিনী আর প্লাতেয়াদোর ডাকাত দল।
টেবিলক্লথ থেকে ভেসে আসতো বারুদের গন্ধ।
আমার বাবা পানীয় পানের ফাঁকে
শোনাতেন জাপাতা আর ভিয়া
সোতো, গামা আর ফ্লোরেস মাগোন ভাইদের কাহিনী।
টেবিলক্লথ থেকে ভেসে আসতো বারুদের গন্ধ।
আমি চুপ করে থাকতাম
আমি কার গল্প বলবো?
তথ্য সংগৃহীত ও সম্পাদিত। সূত্র – অন্তর্জাল