অক্ষয় কুমার বৈদ্য

সরসভূমি সুন্দরবন অধ্যুষিত দঃ২৪পরগনা জেলায় কবির জন্ম। শৈশবে মৃত্যু মুখ আর কৈশোরে মৃত্যু মিছিল কবি মনকে বিচলিত করলেও তা কখনোই প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেতে পারেনি। সাহিত্য সংস্কৃতির ফল্গুস্রোত সতত প্রবাহিত হয়ে চলেছে হৃদয়ের গহীনে। তারই ফলস্বরূপ প্রথম কাব্যগ্রন্থ "মৃত্যু চুম্বন" প্রকাশ করেন। প্রকাশিতব্য গ্রন্থ "এসো ছুঁয়ে দেখি", 'সুন্দুরীর হলদে গয়না ', 'আহত তীরের তীক্ষ্ণ ফলা'। পেশায় শিক্ষক আর নেশা সাহিত্য সংস্কৃতি চর্চা।

মৃত্যু ও মৃদু প্রথম আলাপ

যে ঝড়ে ভাঙে তুমি, ভেঙে চুরে অসহায় ঘর মেঘ উড়ে অভিমানী ভিতর, বৃষ্টির ধার তুমি জানো, প্রেম সামলায় সেই ঝড়, তির্যক কথা সামলায় সময়, সমাজ কিংবা নির্জন সংশয় তুমি না চাইলেও প্রতিদিন হোক প্রিয় বিবাদ, বন্ধ কথারা থিতিয়ে পড়ুক মনের পাত্রে প্রতিদিন একপশলা হাওয়ায় নীচে ফুটুক নীলচে পরাগদাগ যে ভাবে স্রোতে ভাসতে ভাসতে নৌকা হয়ে…

Read More

একটি অসম্পূর্ণ সংলাপ

কথা রেখেছি গোধূলি সন্ধা, যে বসন্তে দুজন হলুদ হয়ে ওঠার কথা হয়েছিল। আমি প্রতিক্ষা সাজিয়েছি কুঞ্জকুসুম, সাত সুতোর সুখ । প্রতিদিন যত্ন করে মাটি রেখেছি মুঠো করে। উড়িয়েছি দৃষ্টিমেঘ। প্রতিদিন বাতাসকে শুনিয়েছি লাজ রাঙা প্রজাপতির আলোকথা দীর্ঘশ্বাসকে হৃদয়ের সিন্দুকে অযত্নের সাথে জমতে দিয়েছি কথা রেখেছি তোমার অনিদ্রিত রাতের অন্ধকার হতে। কথা রেখেছি আমার অকাল স্বপ্ন…

Read More

যে মুহূর্তগুলো আলগোছে ছুঁয়ে আছে তোমার

যে মুহূর্তগুলো আলগোছে ছুঁয়েছে তোমার টিপ, শাড়ির গন্ধ সেই চিহ্নিতক্ষণ আমার ভালোলাগা। যে স্বপ্নগুলো পাখির মতো আকাশ খুঁজতে গিয়ে আর ঘরে ফেরেনি সে মুহূর্তেগুলো আমার সাহস। যে ছন্দে হাওয়ায় ফুলেরা জি সার্পে বেজে ওঠে তাকে আমি বসন্ত নামে চিনি যে মুহুর্তেগুলো ঢেউ হারা নদীর মতো একা করে দিয়ে গেছে তাকে ডেকেছি অযত্ন। মেনে নিতে পারি…

Read More

অক্ষয় কুমার বৈদ্য়ের তিনটি কবিতা

জল আগলে রাখা যায় না তুমি নদী হতে চেয়ে ছিলে ঢেউ জমিয়ে রাখবে বলে তীর ছুঁতে চাওনি কোনদিন ভেসে যাবে দূর তুমি ফুটতে চাইলেও ফুল হতে চাওনি ঝরে যাবে বলে ঝরা অভিমান চেয়ে মেঘ হয়ে ছিলে , আকাঙ্ক্ষা আর ভাঙা যন্ত্রণা পেতে দিয়ে ছিলে বুক, আবির মঞ্চ, আহত পাখির আকাশ অথচ জানো না ডানার শব্দ…

Read More

হৃদয়ের মন্ত্র

যে হৃদয়ে কেউ ভালোবেসে আগুন রাখতে পারে না সেই হৃদয় কিভাবে যত্ন করে রাখবে ক্ষত! যে হাত ধরে রাখতে পারে না আঙুলের টান সে হাতের ভাগ্যরেখাতে মেলাবে কিভাবে নক্ষত্রপুঞ্জ, রাশিচক্র! কতক্ষণ আর নিজেকে ধরে রাখবে অস্থির হাওয়া ‘যদিদং হৃদয়ং মম, তদস্তু হৃদয়ং তব’ মন্ত্র উচ্চারণ কতক্ষণ আর তোমার সিঁথি ভ’রে রাখবে চাঁদের জোৎস্নায় পাতাঝরা গাছ…

Read More

তুমি’র চোখে জাগে আরেকটা তুমি

একটা তুমি আমার গ্রীষ্ম ধুয়ে শ্রাবণ দিয়ে ছিলে একটানা বাঁশির পাশে কলঙ্ক রেখেছিলে তুমি প্রাচীন, আরেকটা তুমিকে ঘিরে লালনের গান একটা তুমির ভিতরে যে আরেকটা তুমি ঘর বাঁধতে চায় আকাশের জোৎস্না জমিয়ে ভেসে যেতে চায় নির্জন একতারায় একটা তুমির গল্প জানেনা নোনা মাটি নোনা গাছের ছালে ক্ষয়িত মনের দাগ তুমি’র চোখে জাগে আরেকটা তুমি সারারাত…

Read More

টেলিপ্যাথি

তোমাকে বলেছি তো ভালোবাসতে হলে কাছে আসা কিংবা দূরে যাওয়াটা জরুরি নয়,  ভালোবাসা আসলে টেলিপ্যাথি। মনে মনে হেঁটে গেলে ঠিক গন্তব্যে যাওয়া যায়। তোমাকে বলেছি না ভালোবাসতে হলে চাঁদ দেখতে হবে তেমনটাও নয়,  অন্ধকারে ডুব দিয়েও আকাশ পাবে, পাবে এক ঝাঁক প্রেমিক প্রেমিকা নক্ষত্র, অজান্তা গুহাঘর। তোমাকে বলেছি তো অনুভূতি একটা নির্জন বৃষ্টির নাম তোমার…

Read More

বৃষ্টি ভাসান

তুমি ছেড়ে গেলে কক্ষপথ পৃথিবী কমিয়ে ফেলে গতি দীর্ঘ পোড়া দিন পাক খেতে খেতে ফেরে, সন্ধের ঘরে চোখে ভাসে চাঁদ, জলের প্রাচীন বসতি রাত জমানো পাতায় খসে অন্ধকার বসে অর্ধচ্ছেদ, বৃষ্টি ভাসান এই চাওয়াকে ঘিরে আমার বুকে গড়ে উঠেছে শ্বেতমহল তুমি হয়তো চাওনি, প্রেমহীন চোখে উচ্চারিত হোক বিষাদ-উষ্ণায়ণ আমার হৃদয় ঘরে দাউ দাউ আগুন এই…

Read More

তোমার চোখে লাগলো হলুদ হাওয়া

…তারপর তারা এসে বসল তোমার চোখে তুমি দুহাতে ঢাকলে লজ্জা হাতের ছায়ায় তুমি তুমি খুললে চোখ আকাশ উচ্চারিত হল দৃষ্টিতে বুকের পাশে উতল হলো ঢেউ … তারপর একটি প্রজাপতি এসে বসল তোমার গায় তোমার ভিতরে তখন অস্থির হলুদ পরাগ নির্জনতা ভেঙে আরও মুখর দূর ভেঙে কাছে কামরাঙা আলো হাওয়ায় ডানায় দোল … তারপর জ্বলে উঠেছে…

Read More

জ ন্ম দি ন

রেবতী নক্ষত্রের অনন্ত আলোয় বৈশাখী বাতাসে ভাসে জোড়াসাঁকোর ঘর দোর অন্দরমহল। প্রথম আলো ছড়িয়ে পড়েছে পৃথিবীর চোখে মুখে। পরিচয় হলো প্রকৃতির সাথে, আকুল আকাশে সাথে। …একেলা রাতে। গান বাঁধল পাখিদের দল, রাঙা মাটির পথে উদাসী বাউল। উঠোন তখন সেজেছে, সেঁজুতি গন্ধে জেগেছে। আলোয় ঝিলমিল করে উঠল মাটি। মৃন্ময়ী প্রকৃতি। শাঁখ বাজাও। বাজাও শাঁখ। প্রদীপ জ্বালো।…

Read More

প্রতীক্ষা

এক ফোঁটা মৃত্যুর জন্য আমি নক্সা আঁকা পৃথিবীর ওপর প্রতীক্ষা করছি ঝুলন্ত মেঘের রঙে ভাসছিল আকাশের দুরন্ত সৌন্দর্য মাটির কাছাকাছি কেউ সাজাচ্ছে পালক, কেউ ভরছে লক্ষ্মীর ভাঁড়ার, কেউ বোধের টানে ঘর ছাড়া একতারা হাতে মেঠো পথের সঙ্গী, মাধুকরী সহযাত্রী কিংবা ভাটিয়ালি সুর নদীর স্রোত পায়ে পায়ে ঘুড়ি সহস্র ঘুম বয়ে বেড়াচ্ছে মহেঞ্জোদাড়ো বাতাসে নীল বাতির…

Read More

পথ শেষ হলে

কোলাহল ভেসে যাচ্ছে বিষন্ন হাওয়ায় নিজের মধ্যে নিজেই দাঁড়িয়ে দেখছি কিছুক্ষণ অনেক দূরের দেশে চেলি শাড়ি, লাল ফিতের ফুল নদীর বুকে গাংচিলের খিদে পথ বেঁকেছে ঢেউয়ের পরে ঢেউ প্রিয় ঘর ঘুম ছাড়া প্রিয় ঝগড়া জরিপ করা কান্না প্রিয় হাটবার তেল নুন প্রিয় ঝরা পাতা, অভিমানী উঠোন দূরত্ব সুতো খুলে একটু একটু হাঁটা পথ শেষ হলে…

Read More
error: বিষয়বস্তু সুরক্ষিত !!