জয়িতা চট্টোপাধ্যায়

কবি জয়িতা চট্টোপাধ্যায়, রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতক, রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয় এবং অন্নামালাই বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী অর্জন করেছেন। দেশ বিদেশের বিভিন্ন পত্রিকায় তার লেখা কবিতা নিয়মিত প্রকাশিত হয়ে আসছে।

জীবনের দেয়ালা

পায়ে পায়ে জড়ানো শৃঙ্খল তুমি দেখো তুমি দেখো রক্তচাপে, আঘাতে পড়ে থাকা কামনার উদাল শরীরে পৃথিবীর বিষম বৃষ্টি জ্বলন্ত দাবানল তুমি দেখো আঙুলের মুগ্ধ ঢেউয়ে দুঃসাহসী দৃষ্টি অভিভূত চোখ, অশ্রু পাহাড় ফাটিয়ে ঝর্ণা এবং অবগাহন হে ঈশ্বর আমি দেখি ব্রহ্মাণ্ডের বৃহৎ একক মন সেখানে রহস্যের লাল জল…

Read More

অরণ্য

মানুষের মতোই অরণ্যের অনেকাংশে জল স্হিতিগ্রাহ্য পার্থিবতা শরীরে শরীরে অরণ্য দাঁড়িয়ে থাকে, যে ভাবে কোনো আদিম পুরুষ পার্থিব কোনো মানুষ স্বাধীন সমাসীন দুঃখের গভীরে থাকা করুন নিঃশ্বাস চলা ফেরা করে কত ব্যস্ততা শব্দহীন হয়ে আছে অরণ্যের ভেতরে ঘুমিয়ে পড়ার শব্দের মতন নির্জন কোলাহল ঘুমন্ত পাথর বা অবসাদে ঢাকা অরণ্য যেমন কতো গূঢ় সংযম অরণ্যের ভেতরে…

Read More

ইচ্ছাপ্রবণ

গভীর আঘাত সয়ে উঠে দাঁড়ালো যে মানুষ মর্মমূল থেকে দুঃখ আছড়ে পড়ছে তার শরীরে হাত, পা কাঁপছে কালো ছায়ার মতন নুয়ে পড়ছে শরীর মোমের মূর্তি ভেঙে পড়ছে শরীরে হলুদ হাওয়ায় ভিজে যাচ্ছে সব আরও কিছুটা অবকাশ দরকার পথ্য, একমুঠো ভাত সব অচল হাত কাঁপছে, পা কাঁপছে দুঃখের যন্ত্রনায় কে যেন অবিরল বলে যাচ্ছে সেরে উঠুক,…

Read More

বৃষ্টি হলে

রোজ মনে হয় এই দুঃস্হ দিন কেটে যাবে বৃষ্টি হলে কেটে যাবে ক্লেশ কেটে যাবে দীনহীনতা বৃষ্টি হলে হয়তো কেটে যাবে অসহায় দুঃখ হয়তো একটা অমোঘ মেঘের জন্ম হবে কেটে যাবে সমস্ত অবরোধ যেভাবে বৃষ্টি হয় কাঙ্খিত উদ্বুদ্ধ কৃষকের মাঠে আকাঙ্খায় উঠে আসে চেনা দুটি চোখ প্রথম বার প্রেমের মতন আবার বৃষ্টি হোক।

Read More

চুম্বন

কত লক্ষ চুম্বন পথে চলে যাচ্ছে হামা দিয়ে কত নষ্ট চুম্বন মিলেছে শহরের মুক্ত নাভিতটে তাকিয়ে মানুষের মাঝখানে দাঁড়িয়ে থাকে অসময়ের ত্রস্ত চুম্বন কত মুখ মুখোশকে ছাপিয়ে শুষ্ক চুম্বন কত ধ্বংসের ভেতর দাঁড়িয়ে থাকে উত্থান কার খোলা বুক আঁচড়ে আঁচড়ে ক্ষত হল লেখেনি অভিধান ধ্বনির গহ্বরে দাঁড়িয়ে থাকে প্রখর চুম্বন শরীর তবু একলা ফেরে ঘরে…

Read More

অন্তর মহল

আমার ভেতর ভরে ওঠে দুপুর ছেয়ে যায় মাথার ওপর নিকষ কালো মেঘ নিঃশব্দে চলে আমাদের নিঃশ্বাস ছমছমে প্রান্তর, চলার পর চলাই অনিমেষ ভেসে ওঠে সুখ দুঃখের অতীত দিন ভয়ে ভয়ে সরে আসি তোমার আরও পাশাপাশি এই দুঃখে ছিঁড়ে যায় ছিন্ন ভিন্ন ব্যথাময় গ্রামান্তের দিক চোখে চোখ রেখেও আজ আর কাউকে দেখতে পাই না অনন্ত মৃত্যুর…

Read More

হারানো দিন

কালো আগুন্তুক হয়ে শীতবৃষ্টির হেমন্ত কুয়াশায় ভিজে এখানে এসেছি পাহাড়ের গাঢ় ছায়া যেখানে পড়ে যেখানে নদীর আরম্ভ জলের ভেতর মাটির গুল্ম আমার শরীর কথা বলে আদম ভাষায় পাথরের মতন কালো চোখে তুমি তাকাও দীর্ঘ অন্ধকারের ভেতর আমি বড় নুয়ে পড়েছি। +

Read More

অঝোর

আমি তোমাকে নিয়ে যাব এক বুক জলে পৃথিবীতে রয়ে যাবে দম্ভের ঘরের কাঠামো ঝাপসা চোখে হাহাকার উঠছে ফিরে আসে আমার কবিতায় মাটির প্রতিভা আমার শরীর জুড়ে উদাসীন জল ঘোর রাতে আমার স্মৃতিও হয়ে যায় তরল আজ আমার ঘরবাড়ি ভিত হারা তোমাকে সহস্র প্রনাম অঝোর বৃষ্টিধারা।

Read More

বন্দনা

তোমাকে মনে মনে উপাসনা করি জানি এই স্মৃতিতে তুমিই স্মরণযোগ্য বহু বেদনায় তোমাকে খুঁজি তোমাকে খুঁজি অসময়ে তোমার প্রতিভা এ শতাব্দীর প্রাধান্য এ শহরে আজও তুমি প্রবাদতুল্য তুমি আজ ও আমার কাছে গাঢ় স্মরণীয় এই শহরের বিরুদ্ধ পথে আমি একাকী প্রবাসীর মতন গোলাপের গায়ে গাঢ় প্রেরণার মতন তুমি তোমার প্রাচীন ভাসায় ঋতুরা বড় উৎসাহী বহু…

Read More

বিষ

তুমি মুখের সামনে তুলে ধরলে বিষের ভাঁড় বললে ‘খেয়ে নাও’, তোমার চোখের সামনে আমার পতন হল, ধমনীর ভেতর মাথার ভেতর বিষ বিঁধে যাচ্ছে আমার শব দেহ নিয়ে তুমি বানালে দূর্গের প্রাকার নিজের শরীরের আগুন দিয়ে দাউ দাউ করে জ্বলে গেল চুল আমি না তুমি ধ্বংস হলে চেতনাহীন এক হলাহল বিষের ভাঁড় চুমুক দিতে দিতে উঠলো…

Read More

অবনত দিন

আপন সুখে তুমি চলে গেছ পূর্ণিমার দিকে আমার অন্ধকারে নিঃশীল বসে থাকা অলস মনোহর জল আমার চোখের জলের কাছে ফিকে আমি জানি এ পৃথিবী শূণ্যের বিরোধী তবু কেন যেন ছুঁড়ে দেয় মধ্যরাত ঢেউয়ের ছলনাও প্রস্তুত দিগন্ত অবধি কাদের যেন হাতে গড়া ছিল একাল ওকাল জোড়া ব্রীজ খোলাস্রোতে আজ তারা মিলিয়ে যায় পরিহাসময় সকাল আসে, নিঃস্ব…

Read More

পৃথক

তোমার মধ্যে অন্ধকার তোমার মধ্যে আলো কতো মধ্যরাত সয়েছে তোমার তরবারি রক্তময় ভীষণ হিংস্রতা ভেতরে ভেতরে নষ্ট হয়ে গেছি মানুষের মতো দেখেছি মৃত্যুর স্পষ্টতা দেখেছি আমার প্রাণ নিয়ে খেলা নিজ শর্তে আমি ও আজ পৃথক বিপ্লবী।

Read More
error: বিষয়বস্তু সুরক্ষিত !!