মৃত্যুশোক ও রবীন্দ্রনাথ

“আমি পরানের সাথে খেলিব আজিকে/মরণখেলা/নিশীথবেলা” (ঝুলন) আথবা “মরণ রে তুহু মম শ্যাম সমান” (ভানুসিংহের পদাবলী) মৃত্যু মানবজীবনের এই চিরন্তন সত্য ঘটনাটি রবীন্দ্রনাথ জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে নানাভাবে উপলব্ধি করেছেন। মৃত্যু যেমন তাঁর কাছে ভয়ংকর তেমনি মৃত্যু তাঁর মনে অমৃতের আভাষ এনে দেয়। “হে বিশ্ববিধাতঃ, আজ আমাদের সমস্ত বিষাদ-অবসাদ দূর করিয়া দাও- মৃত্যু সহসা যে যবনিকা অপসারণ…

Read More

ধারাবাহিক উপন্যাস: এ এক অন্য আঁধার (পর্ব- ১০)

শনিবার সন্ধেয় বিভাস সামন্ত নিজের ড্রইংরুমে বসে অত্যন্ত মনোযোগ দিয়ে খবরের কাগজ পড়ছেন। স্বরূপনগর এলাকায় নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষেত্রে তাঁর প্রভাব প্রতিপত্তির শেষ নেই। সেকথা স্থানীয় থানার ওসিও জানেন। তাৎক্ষণিক কোনো ঘটনা ঘটলে ওসিকে না জানিয়ে রাজনীতির লেবেলে সামন্তবাবু আগেই সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন। বাধ্য হয়ে তা ওসিকে মেনে নিতে হয়। ঘটনার গতিপ্রকৃতি নিয়ে অন্য ভাবনা থাকলেও…

Read More

আশাবাদ

তুমি যতই বল আমি তালগাছ আমি কারুজল মনপাখি ছুঁতে জানি গভীর সন্তর্পণে ধস্ত-মনাহত কষা দাঁতে প্রতিদিন কষ্টের পৃথিবী থেকে বের হয় দিবানিশি মাল্য যে ফুল দুঃখ দেখেছে রেণু উড়েছে তার গা থেকে উচ্চতা শীর্ষ ছোঁয় একদিন নিচে নামে উড়ন্ত ঘুড়ি করাতের জীবনের কাছে নীল নীল যত অলেখা আদরে গলে যায় পাথরের অনুর্বর ভূমি আমাকে শোনাতে…

Read More

প্রত্যুপকার

হাজার পাঁচেক টাকা ধার হিসাবে দিবি ভাই। কিছুদিনের মধ্যে দিয়ে দেব।আসলে আমার শরীরটা খুব খারাপ। চিকিৎসা করাতে হবে কিন্তু হাতে মোটে টাকা কড়ি নেই। এদিকে চিকিৎসা না করাতে পারলে… এক নিঃশ্বাসে কথাগুলো বলে ফুলবাগিচা গ্রামের ভুবন সরদারl অমলের মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে একদৃষ্টে কিছুক্ষণ। চোখে স্থির প্রতীক্ষা। কৌতূহল মেখে আছে সে চাহনিতে। হালকা হাওয়ায় কলাপাতার…

Read More

যুদ্ধবন্দী ও পাকিস্তানের একটি প্রপাগাণ্ডা ডাকটিকিট

১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর ঢাকার তৎকালীন রেসকোর্স রমনা ময়দানে বাংলাদেশ-ভারত যৌথ কমান্ডের কাছে জেনারেল এ.কে. নিয়াজির নেতৃত্বে প্রায় নব্বই হাজার পাকিস্তানী সেনা আত্মসমর্পণ করে। বাংলাদেশের তৎকালীন অস্থায়ী সরকার চেয়েছিল বিশেষ আদালত স্থাপন করে এসব যুদ্ধবন্দী সেনাদের বাংলাদেশে গণহত্যার অভিযোগে বিচারের মুখোমুখি করার। অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম এ বিষয়ে ২৩ ডিসেম্বর ১৯৭১ ভারতকে আহ্বান জানান…

Read More

ছদ্মবেশী

দু-একটি ছদ্মবেশী মেঘ কখনো কখনো ভেসে আসে মাথার ওপর তারা বৃষ্টি আনে না, শুধুই বজ্র আনে; এ মাঠে আমি একা, খুঁজতে থাকি কাকে? দেখা হয় না কারও সাথেই, সূর্য ঢাকে মেঘে। আঁধারের আবছা রাক্ষস নামে পথে আদিম অস্ত্রের মতো আতঙ্ক নাচে; পিছিয়ে আসি, আবার এগিয়ে যাই যেতে যেতে থামি; আমার সহিষ্ণু ইচ্ছাগুলি নষ্ট হয়। সুড়ঙ্গের…

Read More

ধারাবাহিক উপন্যাস: এ এক অন্য আঁধার (পর্ব- ৯)

প্রকৃতির রাজ্যে যেমন ঝড় ঝঞ্ঝা ঘটে থাকে, মানুষের জীবনেও তার সার্থক প্রতিফলন দেখতে পাওয়া যায়। রোজকার জীবন যেন প্রকৃতির আদলে এগিয়ে চলে। গ্রন্থিবন্ধনে প্রকৃতি আর মানুষ যেন হাত ধরাধরি করে এগিয়ে চলেছে। রাতের শেষে সকাল আসে। পূবের আকাশ লাল হয়। সূর্যের উঁকি দেখতে পাওয়া যায়। দুপুরে বিস্তার ঘটে পৃথিবীর প্রাচীনতম বন্ধুর গনগনে আলো। বিকেল হলে…

Read More

নজরুলকাব্যে মানিকগঞ্জের চিত্রকল্প

কাজী নজরুল ইসলাম বর্তমান শতকের কবিকুলের অন্যতম এক মহৎ ব্যক্তিত্ব। তিনি আমাদের জাতীয় কবি; জয়বাংলা ও স্বাধীনতার রূপকার। তাঁর রচনায় যেমনি ভাবের, মননের, চিন্তনের, প্রকরণের বৈচিত্র্যতা রয়েছে; তেমনি বৈচিত্র্যতা রয়েছে তাঁর ব্যক্তিজীবনের কর্মে, ধর্মে, আদর্শ ও বিশ্বাসে। তাঁর কবিতা, গান ও সাহিত্য পর্যালোচনায় কবির স্পর্শকাতর মনের বাস্তব বর্ণবহুল চিত্রকল্পের প্রমাণ মিলবে। কাজী নজরুল ইসলাম আমাদের…

Read More

শরৎ গোধূলি

কয়েকবার ফোন করেও ছেলেকে পেল না ঋতু। মনের ভেতর কেমন একটা অস্বস্তিবোধ হচ্ছে। পুজোর ছুটি আছে সামনে। মহালয়ার দিনে আলাদা করে কেউ পুজো দেয় কি না জানে না ঋতু। কিন্তু বছরে এই দিনটা ঋতুর কাছে অত্যন্ত আনন্দ আর ভাললাগার একটি দিন। উঠানময় শিউলি সাজানো ভোর আর মিষ্টি মায়া জড়ানো নরম রোদ আকাশজুড়ে। সেই সকাল থেকে…

Read More

প্রান্তিক মানুষের জীবন সংগ্রাম: প্রসঙ্গ স্বপ্নময় চক্রবর্তীর ছোটগল্প

এই সময়ের একজন সার্থক ছোটগল্পকার স্বপ্নময় চক্রবর্তী। তিনি সমাজের প্রান্তিক, উপেক্ষিত, অবহেলিত, অন্ত্যজ এবং অন্তেবাসী মানুষদের জীবন সংগ্রাম নিয়ে অপূর্ব দক্ষতায় ছোটগল্প রচনা করেছেন। তাঁর রচিত ছোটগল্পে স্থান পেয়েছে অত্যন্ত সাধারণ, তুচ্ছ মানুষের নিত্যদিনের সুখ, দুঃখ, হাসিকান্না, ব্যথা বেদনা। এবং সেইসব অপাংক্তেয় মানুষের কথাই শেষ পর্যন্ত হয়ে উঠেছে সর্বসাধারণ মানুষের কথা। তাঁর দেখা অতি রূঢ়…

Read More

বাঁচবার আশ্বাস

ঝলসানো মুহূর্তের অনাঁচ কানাচ খানাখন্দ ভরিয়ে শুধু তোমাকেই খুঁজি নির্মল বটের ছায়া চোখের আকাশ মাঠে শিশির ঘাসে রোদের দ্যুতি ঝলসানো মুহূর্ত কানাগলি জুড়ে তোমার উপস্থিতি। গুহা নির্জন, প্রান্তর নিঃসঙ্গতা আশা আর ভয়েদের তারা মিট মিট দায় শেষে স্বপ্নে ভেসে যাওয়ার মিষ্টি ব্যথা_ ঝর্নার সঙ্গীত। ব্যস্ততায় ওঠা পড়া স্বপ্ন আর হতাশার উস পাশ অনন্ত দিগন্ত ঘেরা…

Read More

শব্দহীনা স্বর্ণ কন্ঠ

ধূসর পৃথিবীর ঘোলাটে অন্ধকার সজল মেঘের আড়ালে ‘কাঁচা রোদ’, অশ্রুত প্রভাত। শেষ শ্রাবণের অনিঃশেষ ধারা নীল পাখি ফিরেছে নির্জন কুলায়ে, সুদূর প্রবাসী অনশ্বর বিদায়ের পথে ‘নক্ষত্রখচিত পূর্বাশার প্রান্তদেশে’ প্রগাঢ় শূন্যতা তুমি স্বর্ণ কন্ঠের রানী নিবিড় শ্যামল বনানী নিদারুণ দহন বুকে অনিবার তৃষিত নয়নে নয়নে বিরহিণী ছায়া। বেদনার্ত শব্দেরা লেখে কান্নালিপি নিয়তির নির্মম করাঘাতে ছিন্ন ভিন্ন…

Read More
error: বিষয়বস্তু সুরক্ষিত !!