তৈমুর খান

জন্ম ২৮ জানুয়ারি ১৯৬৭, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বীরভূম জেলার রামপুরহাট ব্লকের পানিসাইল গ্রামে। পিতা ও মাতার নাম :জিকির খান ও নওরাতুন বিবি । শিক্ষা বাংলা ভাষা ও সাহিত্য নিয়ে এবং প্রেমেন্দ্র মিত্রের সমগ্র কবিতা নিয়ে পি এইচ ডি। পেশা শিক্ষকতা। প্রথম কাব্যগ্রন্থ 'কোথায় পা রাখি' বের হয় ১৯৯৪ সালে। বর্তমানে ২০ টি কাব্যগ্রন্থ ও ৮ টি গদ্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে । উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থগুলি হল: বৃত্তের ভেতরে জল, জ্যোৎস্নায় সারারাত খেলে হিরণ্য মাছেরা, উন্মাদ বিকেলের জংশন, স্তব্ধতার ভেতর এক নিরুত্তর হাসি, নির্ঘুমের হ্রস্ব ধ্বনি, আকাঙ্ক্ষার ঘরের জানালা, সভ্যতা কাঁপে এক বিস্ময়ের জ্বরে, প্রত্নচরিত, সর্বনাশের ডায়েরি, কবিতা সমগ্র ১ম ও ২য় খণ্ড। গদ্যের বই : কবির ভাঁড়ারের চাবি, মুক্তির দশক নব্বইয়ের কবি ও কবিতা, কবিতার বাঁক ও অভিঘাত এক অন্বেষার পরিক্রমা, আত্মসংগ্রহ, আত্মক্ষরণ, আত্মস্বর, এই কবিতাজীবন ইত্যাদি। পেয়েছেন বহু পুরস্কারও: কবিরুল ইসলাম স্মৃতি পুরস্কার, দৌড় সাহিত্য পুরস্কার, নতুনগতি সাহিত্য পুরস্কার, আলোক সরকার স্মারক পুরস্কার ইত্যাদি । বর্তমান ঠিকানা : রামরামপুর (শান্তিপাড়া), ডাকঘর রামপুরহাট, জেলা বীরভূম, পিন কোড ৭৩১২২৪, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত

মানবতাবাদী সৈনিক কবি সুকান্ত

চির কিশোর কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য যে মন্ত্র নিয়ে বাংলা সাহিত্য আকাশে উদিত হয়েছিলেন, তা সাম্যবাদের মন্ত্র, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার মন্ত্র, শোষণহীন স্বাধীন সমাজতন্ত্র আনার মন্ত্র। তাঁর আবির্ভাব কালটিকে ঘিরেছিল যুদ্ধ, মহামারী আর দুর্ভিক্ষের করাল ছায়া। সেখানে শুধু শোষণ- পীড়ন-বঞ্চনা। সেখানে শুধু মৃত্যুর কারবার। সেখানে শুধু ক্ষুধার্ত মানুষের হাহাকার। তাই তাঁর রক্তের ভেতর জেগে উঠেছিল বিদ্রোহের স্পন্দন।…

Read More

বাউলের পথেই রবীন্দ্রনাথ

সকলকে মেলাবার সাধনা, সকলের সঙ্গে মিলিত হবার সাধনা একমাত্র বাউল এর মাধ্যমেই সম্ভব। ভারতবর্ষের প্রাচীন ইতিহাস অনুসন্ধান করলে সেখানে দেখতে পাই জাতি ধর্মের এবং বিভিন্ন সম্প্রদায়ের সংঘাতের ইতিহাস সিংহভাগ জুড়ে রয়েছে। এই সংঘাতের একটাই কারণ ভারতবর্ষের মানুষের আত্মগর্ব বা আত্মাভিমান তাদের অন্ধ করে রেখেছে। অহংকার এবং শ্রেণিগত উত্থান কখনোই মানুষের সঙ্গে মানুষের মিলিত হবার সুযোগ…

Read More

স্বঘোষিত নাস্তিক, প্রথাবিরোধী সাহিত্য স্রষ্টা হুমায়ুন আজাদ সর্বকালের আলোকিত মানুষ

হুমায়ুন আজাদ (১৯৪৭-২০০৪) বহু ক্ষণজন্মা মানুষের মতোই সময়ের অগ্রগামী চিন্তাধারার মানুষ ছিলেন। কবি, ঔপন্যাসিক, গল্পকার, সমালোচক, গবেষক, ভাষাবিজ্ঞানী, কিশোর সাহিত্যিক এবং রাজনৈতিক ভাষ্যকার বললেও তাঁর চিন্তাক্ষেত্রকে সীমায়িত করা যায় না। কেননা প্রথাবিরোধী, প্রতিষ্ঠান বিরোধী,সংস্কার বিরোধী বহুমাত্রিক জীবনের অধিকারী একজন মানুষ ছিলেন। যৌনতা, নারীবাদ, ধর্মীয় অন্ধকারবাদ প্রভৃতি ধারণাকে তিনি যুক্তির আলোয় নতুন করে উপস্থাপন করেছিলেন। আশির…

Read More

কোন্ পথে আমাদের সাহিত্য এবং সাহিত্যিক?

যাঁরা সাহিত্য করতে এসে সুনামের জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন, তাঁরা যে কোনো সময় বিপজ্জনকও হয়ে উঠতে পারেন একথা আমার মনে হয়েছে একটাই কারণে, তা হল, এঁরা বড় অধৈর্য। এঁরা একটা কথা একবারও মনে রাখেন না, কোনো ব্যক্তিরই কাউকে সুনাম দেওয়ার সাধ্য নেই। তাঁর সাহিত্যকর্মকে ভালোবেসে হয়তো তাঁকে কিছুটা সমীহ করতে পারেন এর বেশি কিছু নয়।…

Read More

নববর্ষের চিঠি

মালতীকে চিঠি লিখিব আমরা কেমন নববর্ষ আনিতেছি এমন আর কখনও আসে নাই মাটির কলস কিনিয়া আমরা জল ভরিব রবি ঠাকুরকে মালা পরাইয়া পথে নামাইব নতুন কাপড় পরিয়া শঙ্খ বাজাইব তুমি দূর হইতে জলহরিণীর মতো চাহিয়া রহিবে তোমার উৎসুক মুহূর্তগুলি পাপড়ি মেলিবে এবার আমরা সত্যিকারের বাঙালি হইব তুমি বাঙালার মাটিকে প্রণাম করিবার জন্য ব্যাকুল হইয়া উঠিবে।

Read More

আমার কবি-জীবনের অকপট স্বীকারোক্তি

আমি নামের আগে কখনও ‘ডক্টর’ লিখি না। কেন না ‘ডক্টর’ আমার নাম নয়। নামের কোনও অংশও নয়। কিন্তু কয়েকটি ক্ষেত্রে কিছু প্রতিষ্ঠান আমার নামের আগে এটা বসিয়ে দেয়। তখন নিজেকে খুব লজ্জিত এবং ভণ্ড বলে মনে হয়। কারণ ‘ডক্টর’ লেখাতে উদ্ধত অথবা অহংকারের প্রকাশ বলে মনে করি।ডক্টর ডিগ্রি সাহিত্য রচনার ক্ষেত্রে কোনও মাপকাঠিই নয়। বহু…

Read More

নিজের সঙ্গেই নিজের ঝগড়া

কোনো অনুষ্ঠানে কবিতা পাঠ করতে যাওয়া, সংবর্ধনা নেওয়া, পুরস্কার বা স্মারক গ্রহণ করা আমার কাছে ভীষণ হাঙ্গামার ব্যাপার। এসবের যদি ডাক বা আমন্ত্রণ না পাই তাহলে আমার খুব আনন্দ হয়। নিজের সঙ্গে নীরবে নিভৃতে কিছুটা সময় কাটানোই আমার কাছে বড় মূল্যবান। মনের মধ্যে নানা প্রশ্ন এসে হাজির হয়। কী হবে কবিতা পাঠ করে? কী হবে…

Read More

কোথায় পাব ‘মানব’ পরিচয়!

নিজের পরিচয়টুকু দিতে গিয়ে ‘আমি বাঙালি’ শুধু এই দুটি শব্দই মুখ দিয়ে বেরিয়ে আসে। প্রশ্নকর্তা আরও একধাপ এগিয়ে যখন আরও গভীরে প্রবেশ করতে চান তখন মুশকিলে পড়ে যাই। স্তব্ধ হয়ে যাই কিছুক্ষণের জন্য। অবশেষে বলি, ‘হ্যাঁ, মুসলমান। নাম অমুক।’ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই প্রশ্নকর্তার মুখের ভূগোল পাল্টে যায়। হয় তিনি স্থান পরিবর্তন করেন, নয়তো জানালার বাইরের দিকে…

Read More

এক বাউণ্ডুলের ভুবন

শক্তি চট্টোপাধ্যায় (১৯৩৩-১৯৯৫) আমার কাছে বাউণ্ডুলে ভবঘুরের মতো। তুড়ি মেরে জীবন ফুরিয়ে দিতে চেয়েছি বার বার তাঁর কাছে। বন্ধ ঘরের দ্বারে ডেকেছি নিজেকে। নীল ভালোবাসায় সোনার মাছি খুন করেছি। নিজেওতো খুন হয়েছি বাঁচার রসদ ফুরিয়ে গেলে। কিন্তু আবার জ্যোৎস্না রাতে একাই আমি স্বেচ্ছাচারী। বিষাদ যখন জমাট ঘন, মেঘ ডেকেছে, বজ্রসহ বৃষ্টি এসে ভিজিয়ে দিয়ে গেছে,…

Read More

স্মরণে কবি-শিল্পী-চিত্রপরিচালক-গবেষক পূর্ণেন্দু পত্রী

‘আমার পতাকা উড়ছে পাখিদের স্বাধীনতা ছুঁয়ে।’ এই পতাকা যাঁর উড়ছে আজ তাঁর মহাপ্রয়াণের দিন। একাধারে কবি সাহিত্যিক, প্রচ্ছদশিল্পী, চিত্র পরিচালক, গবেষক প্রভৃতি বিস্ময়কর গুণের অধিকারী সেই ব্যক্তি পূর্ণেন্দুশেখর পত্রী (২ ফেব্রুয়ারি ১৯৩১ – ১৯ মার্চ ১৯৯৭)। পূর্ণেন্দু পত্রী নামে সর্বাধিক পরিচিত; ছদ্মনাম সমুদ্রগুপ্ত। বাংলা সাহিত্যের শতাধিক ধ্রুপদী গ্রন্থের প্রচ্ছদ অঙ্কন করেছিলেন তিনি। তাঁর অঙ্কিত প্রচ্ছদচিত্রগুলি…

Read More

অস্তিত্বের জাদুঘরেই অনন্ত কবিতার প্রবাহ

কবিতা যখন নিজের সঙ্গে নিজেরই সংলাপ, তখন নিজেকে দেখার এর থেকে বড় আয়না আর আমাদের সামনে নেই। আয়নার সঙ্গে নিজেকে দেখার পার্থক্য হল,আয়না শুধু বাহিরের অবয়বটি দেখাতে পারে,কিন্তু কবিতা ভেতরের রূপটি তুলে আনতে পারে। আর এই ভেতরের রূপটিই আসল রূপ। এখানে ছলনা সাজে না। মিথ্যা আরোপ থাকে না। ভাঙনের নৈঃশাব্দ্যিক ক্রিয়া ও কান্না একইসঙ্গে উঠে…

Read More

নারী-জীবনের অনিশ্চিত অন্ধকারের পাঠ

“বিশ্বে যা কিছু মহান সৃষ্টি চির কল্যাণকর অর্ধেক তার করিয়াছে নারী অর্ধেক তার নর।” কাজী নজরুল ইসলামের ‘নারী’ কবিতাটি ছোটবেলায় মুখস্থ করেছিলাম। নারী ছাড়া পুরুষ অসম্পূর্ণ, আবার পুরুষ ছাড়াও নারী অসম্পূর্ণ। দুইয়ের মিলনেই গড়ে উঠেছে সংসার। আবার দুইয়ের মিলনেই গড়ে উঠেছে সত্য-শিব-সুন্দরও। জীবনানন্দ দাশের ‘রূপসী বাংলা’য় এই রূপ পেলাম: “কৃষ্ণা যমুনায় নয় – যেন এই…

Read More
error: বিষয়বস্তু সুরক্ষিত !!