দোলের স্মৃতি

দোলের স্মৃতি পি. শাশ্বতী ঋতুরাজ বসন্তের আগমনে প্রকৃতি সলজ্জ নববধূবেশে সুসজ্জিতা। গাছে গাছে কচিপাতার সমারোহ, আম্রমুকুলের সৌগন্ধে আমোদিত বিহ্বলিত বাতাস। চারিপাশে পলাশ,কৃষ্ণচূড়ার রং বাহারী। প্রাণের সাড়া জাগানো গানে আকাশ,বাতাস মুখরিত। দিকচক্রবাল আন্দোলিত মাঝিমাল্লার ভোজপুরী,বিহারী হোলির সুরে। দিগন্ত জুড়ে আজ ফুলের আগুন। এসবের মধ্য দিয়েই ফাগুনী পূর্ণিমায় আসে রঙের উৎসব। আগের দিন চাঁচর বা নেড়া পোড়ানোর…

Read More

দোলযাত্রা – সমন্বয়ের ঐতিহাসিক ঐতিহ্য

সমগ্র ভারতে একই উৎসব প্রচলিত রয়েছে, এমন উদাহরণ মোটামুটিভাবে তিনটির বেশী পাওয়া যায় না। সেই উৎসব তিনটি — হলদশেরা, দেওয়ালী এবং দোল। লোকসাংস্কৃতিক গবেষকদের মতে, প্রথম দুটির মধ্যে মানুষের ধর্মীয় অনুষঙ্গটুকু উৎসবমনস্কতার থেকে প্রবলতর হয়েছে, কিন্তু দোলযাত্রার ধর্মানুষঙ্গটি এর উৎসব-মুখরতার কাছে প্রকৃতপক্ষে গৌণই হয়ে গিয়েছে। সেদিক থেকে দেখলে এটিই হল একমাত্র সর্বজনীন সর্বভারতীয় উৎসব, যেখানে…

Read More

আবার সেই দোল

আমাকে দেখে তুমি ছুটে গিয়ে চিলেকোঠায় খিল তুলেছিলে আমি তো রং-চং মেখে তখন ভূত যত বলি রং নয় রে, লাল আবির তবু তোমার সেই একই— না না না… তার পর দিব্যি কাটাকাটি তুমি বলেছিলে, তা হলে একগাদা নয়, একটুখানি। মনে পড়ে? সেই চৈত্রে আবিরের ছলে তোমাকে সিঁদুর পরিয়েছিলাম। বোনের মুখে এ কথা জানতে পেরে পুকুরপাড়ে…

Read More

বিবর্ণ অভিযোজন: পর্ব-১০

উপন্যাসিক মুসা আলি’র ‘বিবর্ণ অভিযোজন’ ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হচ্ছে। এই উপন্যাসে শিক্ষকের পিতৃত্ব একজন ছাত্রের জীবনকে কত বেশি উদ্বেলিত করে তুলতে পারে, সেই অনুভূতির বিস্তার ঘটেছে এ উপন্যাসের পাতায় পাতায়, পরতে পরতে। পড়তে পড়তে আপনি আপনার প্রিয় শিক্ষককে নতুন করে আবিষ্কার করতে পারবেন। ।। দশম পর্ব ।। সময়ের ছন্দ জীবনের গতিকে কীভাবে আমূল পরিবর্তন করে দেয়,…

Read More

বাংলার নবজাগরণ ও মাইকেল মধুসূদন ৩

ইতালির রেনেসাঁসে দেখা গিয়েছিল গ্রিক ও রোমান সাহিত্যের পুনঃচর্চার ঐতিহ্য, যা প্রায় হাজার বছরের পুরোনো ধারার পুনরুজ্জীবন ঘটাতে সমর্থ হয়। মধুসূদনও গ্রিক ভাষা শিখে গ্রিসের মহাকবি হোমারের লেখা আয়ত্ত করতে সচেষ্ট হন। হোমারের প্রতি তাঁর অকৃত্রিম শ্রদ্ধা প্রকাশ পেয়েছে ‘হেক্টর বধ’-এর ভূমিকায়। মাইকেলের মতে, ইউরোপীয় মহাকাব্য রচয়িতাদের মধ্যে হোমারই শ্রেষ্ঠ। ‘মেঘনাদবধ কাব্য’টিকে তিনি নিজেই মূল্যায়ন…

Read More

এক বাউণ্ডুলের ভুবন

শক্তি চট্টোপাধ্যায় (১৯৩৩-১৯৯৫) আমার কাছে বাউণ্ডুলে ভবঘুরের মতো। তুড়ি মেরে জীবন ফুরিয়ে দিতে চেয়েছি বার বার তাঁর কাছে। বন্ধ ঘরের দ্বারে ডেকেছি নিজেকে। নীল ভালোবাসায় সোনার মাছি খুন করেছি। নিজেওতো খুন হয়েছি বাঁচার রসদ ফুরিয়ে গেলে। কিন্তু আবার জ্যোৎস্না রাতে একাই আমি স্বেচ্ছাচারী। বিষাদ যখন জমাট ঘন, মেঘ ডেকেছে, বজ্রসহ বৃষ্টি এসে ভিজিয়ে দিয়ে গেছে,…

Read More

পিতৃতন্ত্রের পূর্বাপর ৪

।।চার।। প্রজাতি হিসাবে মানুষের বিকাশ ও সামাজিক জীব হিসাবে যুূথ জীবনের সাংগঠনিক বিকাশের পাশাপাশি গোষ্ঠীগত-সম্পত্তি ও ব্যক্তিগত-সম্পত্তি গড়ে উঠেছে। গড়ে উঠেছে সম্পত্তিকে কেন্দ্র করে সম্পত্তির মালিক, সম্পত্তির রক্ষাকর্তা, গড়ে উঠেছে বাজার, গড়ে উঠেছে রাষ্ট্র। মানুষের এই সামাজিক বিবর্তনের পাশাপাশি স্ত্রী-পুরুষ সম্পর্কের সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বিবাহের বিবর্তনও দেখতে পাওয়া যায়। অর্থাৎ পারিবারিক রূপটি কীভাবে বদলেছে…

Read More

আমরা কি একটু ভিন্নভাবে ভাবতে পারি না?

নিজেকে প্রকাশ করা, জাহির করা কিংবা নিজের অস্তিত্ব জানান দেওয়া আমাদের দেশের মানুষের সহজাত প্রবণতা। এখন এই প্রকাশ কিংবা অস্তিত্ব জানান দেওয়ার পন্থাতে ভিন্নতা রয়েছে। কেউ নিজেকে প্রকাশ করতে চাই সৃজনশীলতা তথা সৃষ্টিকর্মের মাধ্যমে, নিজের অস্তিত্ব জানান দিতে চাই প্রতিবাদ, প্রতিরোধ, দ্রোহের মাধ্যমে। কিন্তু এই মানুষদের সংখ্যা নিতান্তই নগণ্য। সিংহভাগ মানুষ সংক্ষিপ্ত রাস্তায় হেঁটে নিজের…

Read More

প্রাচীনকালে বাঙালীর বসন

কাশ্মীরী কবি ক্ষেমেন্দ্র তাঁর ‘দশোপদেশ’ গ্রন্থে কাশ্মীর প্রবাসী গৌড়ীয় বিদ্যার্থীদের বেশ অদ্ভুত রকমের একটা ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন। খৃষ্টীয় দশম-একাদশ শতকে প্রচুর গৌড়ীয় বিদ্যার্থী বঙ্গদেশ থেকে কাশ্মীরে বিদ্যালাভ করবার জন্য যেতেন। ক্ষেমেন্দ্র লিখেছিলেন যে, তাঁদের প্রকৃতি ও ব্যবহার রূঢ় এবং অমার্জিত ছিল। তাঁরা অত্যন্ত ছুঁৎমার্গী ছিলেন; তাঁদের দেহ ছিল ক্ষীণ — কঙ্কালমাত্র সার; একটু ধাক্কা লাগলেই যেন…

Read More

গারো পাহাড়ের চিঠি: নাজনীনের নকশা!

বছর বিশেক আগে যে-সকল ছনে ছাওয়া মাটির ঘর এই তল্লাটে দেখেছিলাম; এখন ক্রমেই সেই সব পড়তির দিকে। এখন সেখানে দু’চালা চৌচালা টিনের ঘর। কোথাও কোথাও আবার হাফ-বিল্ডিং। রঙ করা। দেয়ালে সবুজ রঙের কাজ করা লতাপাতা আর ফুলের সমাহার। এই উত্তর প্রান্তিকে নয়া নয়া দালান নতুন সংযোজন। সদরের সাথে যোগাযোগ ভালো। পিচের রাস্তায় সাঁই সাঁই করে…

Read More

বাসন্তিকা

পাতার শেষ বিন্দুতে তোমার ছায়া পাথরে আমার হৃদয় সবুজ আলোর মতো জ্বলে আমাদের বিদায়ী মুহূর্তেরা রোহিনী হয়ে যায় নৌকারা জেগে থাকে তবু রাত পেরিয়ে যাবারও পরে অন্ধকার আমাদের বিচ্ছেদর ডাক নাম না পাওয়ার অভিমান কারও কাছে প্রেম জোৎস্নাও একা কাঁদে কেউ ফিরে গেলে জেনো সমাপ্তিরেখা বলে কিছু নেই আকাশেরও থাকে ছেড়ে যাওয়ার দৃষ্টি কারও গল্পে…

Read More

স্মরণে কবি-শিল্পী-চিত্রপরিচালক-গবেষক পূর্ণেন্দু পত্রী

‘আমার পতাকা উড়ছে পাখিদের স্বাধীনতা ছুঁয়ে।’ এই পতাকা যাঁর উড়ছে আজ তাঁর মহাপ্রয়াণের দিন। একাধারে কবি সাহিত্যিক, প্রচ্ছদশিল্পী, চিত্র পরিচালক, গবেষক প্রভৃতি বিস্ময়কর গুণের অধিকারী সেই ব্যক্তি পূর্ণেন্দুশেখর পত্রী (২ ফেব্রুয়ারি ১৯৩১ – ১৯ মার্চ ১৯৯৭)। পূর্ণেন্দু পত্রী নামে সর্বাধিক পরিচিত; ছদ্মনাম সমুদ্রগুপ্ত। বাংলা সাহিত্যের শতাধিক ধ্রুপদী গ্রন্থের প্রচ্ছদ অঙ্কন করেছিলেন তিনি। তাঁর অঙ্কিত প্রচ্ছদচিত্রগুলি…

Read More
error: বিষয়বস্তু সুরক্ষিত !!