কবিতা আত্মসত্যের মিরর অথবা মিরর পোয়েট্রি
জীবনের জলে আমাদের ছায়া পড়েছে। সেইসব ছায়া আত্মরতির জটিল মুগ্ধতায় বিপন্ন ইশারা। আমাদের কদর্য উল্লাস,…

বাংলাদেশের অস্তিত্বের সাথে শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধীর ঐতিহাসিক অবদানের কথা সকলেই অল্পবিস্তর অবহিত আছেন। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের মহানায়ক, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধ সম্পন্ন হয়। এই মহান মহীয়সী মুুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশে পক্ষে সকল প্রকার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহযোগিতা করেন। যা তাঁর জন্মদিনে সংক্ষিপ্তভাবে উপস্থাপন করা হলো। বৃহৎ সম্ভাবনার বাংলাদেশ, স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের ইতিহাস উজ্জ্বল হয়ে আছে…
অগ্রহায়ণের সকালে একটা ঘ্রাণ এসে নাকে লাগে। পরিচিত মিষ্টি একটা ঘ্রাণ। ওটা আসে জয় কাকার বাড়ি থেকে। মনে হয়, পুরো শৈশব চিত্রময় আবহ নিয়ে পা’য়ে পা’য়ে হেঁটে আসে শহরের একটা ছোট্ট কুটিরে। আমার অনুভবে। সত্যি বলছি শীতকাল আসলেই জয় কাকার কথা মনে পড়ে। খুব মনে পড়ে! আমার স্মৃতি থেকে প্রতিবেশী জয় কাকার স্মৃতি মুছে দিলে…
হাওন দে হারামজাদী! হূছেন আলীর চীৎকারে চমকে ওঠে নাছিরা। হাতের কাজ ফেলে সে পেছন ফিরে তাকায়। তাকিয়ে দেখে হুছেন আলীর চোখ মুখ আগুন হয়ে আছে। সে ভাবে, অইলটা কী গো, লোকটা এমুন করতাছে ক্যারে? আর এই অসময়ে হে বাসাতেইবা আইছে ক্যারে? উৎকন্ঠিত নাছিরা নিজেকেই প্রশ্ন করে। রগচটা হুছেন আলীকে ঘাটাতে সাহস হয় না তার। কিন্ত…
বিভূতিভূষণ যখন কলেজে তৃতীয় বার্ষিক শ্রেণীর ছাত্র ছিলেন, তখন খুব সম্ভবতঃ ১৩২৩ বঙ্গাব্দে তাঁর বিবাহ সম্পন্ন হয়েছিল। পাত্রী ছিলেন—তৎকালীন বসিরহাটের মোক্তার পানিতর গ্রামের কালীভূষণ মুখোপাধ্যায়ের কন্যা গৌরী দেবী। এই বিবাহের সময়ে বিভূতিভূষণের বয়স তেইশ-চব্বিশ বছর ছিল বলে এসময়ে তাঁর মধ্যে থাকা রোম্যান্টিক কল্পনা যে নববধূকে কেন্দ্র করেই বিকশিত হয়ে উঠেছিল, এবিষয়ে সন্দেহর কোন অবকাশ নেই।…
ছবি একটি শব্দহীন জীবন্ত কবিতা, একটা চলন্ত ইতিহাস সময়-প্রকৃতির রূপ-রস-গন্ধ আকড়ে ধরে যুগের সাক্ষী হিসেবে সত্য প্রতিষ্ঠায় সে সাহায্য করে। যেমনি সাহায্য করছে ১৮৮৯ সালের অঙ্কিত রেখাচিত্র লালন-প্রতিকৃতি থেকে লালনকে উদ্ধার করতে। বর্তমান কালেও লালন শাহ (১৭৭২-১৮৯৯) আধ্যাতিক জগতের এক কিংবদন্তির নায়ক। তিনি ছিলেন আমরণ জ্ঞানান্বেষী। দর্শন ছিল তার বুদ্ধির সামগ্রী, স্বজ্ঞান বোধির নন্দন- চেতনা।…
গ্রীষ্মের দুপুরবেলা। বুনিয়াদপুর। পল্লববাবু একা খোলা জানলার ধারে বসে কাঁদছিলেন। তার স্ত্রী বাড়িতে নেই— বাবার বাড়ি বেড়াতে গেছেন। স্ত্রীকে তিনি খুব ভালোবাসেন। চাকরি থেকে অবসর নিয়েছেন অনেকদিন, এখন তার বয়স পঁয়ষট্টি। চোখ দিয়ে টুপটাপ জল পড়ছে, যেন অনেকদিন জমে থাকা কান্না আজ বেরিয়ে আসছে। দরজা খোলা ছিল। সপ্তক ঘরে ঢুকল। বাবাকে কাঁদতে দেখে সে অবাক…
একদল কবিরা সহজ মনের কথা বলেন। বলেন প্রকৃতি ও প্রেমের কথা। তারা প্রেমে বিশ্বাসী। এরা সহজিয়া, মরমী কবি। মানুষের প্রতি, জগতের প্রতি তাদের অগাধ আস্থা। প্রেম এই সকল কবি জীবনের প্রতিটি পর্বেই দেখতে পান। এরা প্রেমের দর্শনে বিশ্বাসী। জগতের সমস্ত সুন্দর কিছুর প্রতি তাদের অগাদ প্রেম। প্রেম এমনই এক সূক্ষ্মসূত্র যা চোখে দেখা যায় না,…
ঐকমত্য কমিশনের বিশেষজ্ঞ প্যানেল প্রস্তাব দিয়েছে যে অধ্যাদেশ নয় সাংবিধানিক আদেশের মাধ্যমেই গণভোট আয়োজন করা হোক। তাদের মতে এতে রাজনৈতিক ও সাংবিধানিক স্থায়িত্ব আসবে। একই সঙ্গে প্রস্তাব এসেছে ব্যালটে দুটি প্রশ্ন রাখার একটি ঐকমত্য থাকা সংস্কার নিয়ে আরেকটি নোট অব ডিসেন্ট থাকা প্রস্তাব নিয়ে। প্রথম দেখায় এটি ভারসাম্যপূর্ণ ও বাস্তবসম্মত মনে হতে পারে। কিন্তু গভীরে…
বহুদিন আনন্দহীন, বহুদিন বিনোদনবিহীন— এই ভরা ভাদরে কাশফুল কাঁদে। আজ শাদা শাদা কাশফুলও খুনরঙা। বাবু’র গড়া প্রতিমা, সরস্বতীর শাড়ির আঁচল ভাসে নদীর জলরাশি, ছুপছুপ রক্তে ভেজা ধুসর কাদামাটির মাঝে। আশ্বিন এলো, তপ্তরোদের তীব্রতায়, পুড়ে যায় প্রভাতের কুয়াশা, ফুলতোলেনা পাড়ার কিশোরী। একদঙ্গল হায়েনা জ্বালিয়ে দেয় কাশবাগান, চড়ুইছানা অঝোরে কাঁদে। তরুণ-তরুণীরা, ধুতি, শাড়ি আর পাঞ্জাবি পরে— নদীর…
।। এক।। সংস্কৃতির বিকাশে যুগ যুগ ধরে সাধারণ গণমানুষ মুখ্য ও অগ্রণী ভূমিকা পালন করে থাকে। ধর্মীয় পরিমণ্ডলের একটি প্রার্থনা পর্ব, যার রীতিনীতি-পদ্ধতি নির্ধারিত নিয়ম অনুসারে ব্রাহ্মণ উপাসনা সম্পন্ন করেন। এই পর্বে শুধুমাত্র ধর্মীয় অনুসারিগণের জন্য উন্মুক্ত থাকে। ধর্মীয় উপাসনার পাশাপাশি আরেকটা পর্ব থাকে। যাকে আনুষ্ঠানিকতার উৎসব বলা হয়। এই উৎসব লোক সংস্কৃতির সাথে আধুনিক…
ফকিরের দাড়ি থেকে ঝরে পড়ছিল ঐতিহ্য, চুলে প্রবাহিত হচ্ছিল প্রাচীন বিদ্রোহের ইতিহাস, চোখে ফোটে শান্ত পাখিদের নিরব গান, কেউ কাছে গেলে সে শুধু হাসতো, যেন মহাকাশ থেকে ফেরা এক ভুলোমনা পরবাসী। হঠাৎ এলো একদল সাদা পোশাক পরা মানুষ, হাতে কাঁচি, চোখে কড়া শাসনের ঝড়। তারা কেটে ফেলল ফকিরের দাড়ি-মাথার চুলের জট, আর জটের ভেতর লুকনো…
বাংলা সাহিত্যের গবেষকদের মতে, খৃষ্টীয় অষ্টাদশ শতকের বাংলা সাহিত্যে বৈচিত্র্য থাকলেও এতে প্রধানতঃ সপ্তদশ শতকের জের টানা হয়েছিল। এসময়ে ধর্মমঙ্গল, কৃষ্ণলীলা, রামায়ণ-কাহিনী, ময়নামতী-গোপীচন্দ্রের কাহিনী প্রভৃতি বাঙালি কবিদের উপজীব্য হয়ে উঠেছিল। তাছাড়া ভাগীরথী-তীরবর্তী বাঙালি নাগরিক সমাজে তখন বিদ্যাসুন্দরের প্রণয়-কাহিনী জনপ্রিয় ছিল। ঐতিহাসিকদের মতে, নবাবী আমলের বাংলার প্রধান তিনজন কবি ছিলেন—রামেশ্বর ভট্টাচার্য, ভারতচন্দ্র রায় এবং রামপ্রসাদ সেন।…