গল্প: শ্রীমতি একটি মেয়ের নাম ৫
।।পাঁচ।। অগ্রগতি সংঘে নবমীর পরের দিন রাতের বেলা আমি স্বপ্নে আবির ও তার বন্ধু তুহিনকে…
।। পর্ব – ৩২।। ২০০৭-এর ১২ মার্চ, সোমবার মহাকরণের একটি নিভৃত ঘরে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক বসল। সেখানে পুলিশকর্তারা হিসেব করে সরকারকে জানালেন, নন্দীগ্রামে তাঁরা যে অপারেশন চালাতে চাইছেন, সেখানে বাধ্য হয়ে পুলিশ গুলি চালালেও মৃত্যু হতে পারে খুব বেশি হলে কুড়ি জন গ্রামবাসীর। আর উত্তেজিত জনতা মারমুখী হয়ে ঝাঁপিয়ে পড়লে, সেখানে মারা যেতে পারে সর্বাধিক…
‘ভালো কবি’ এবং ‘ভালো কবিতা’ কথা দুটির প্রচলন বহুকাল থেকেই চলে আসছে। কিন্তু আমরা কি জানি কাদের ভালো কবি বলে এবং কোন কবিতাকে ভালো কবিতা বলে? অসির চেয়ে মসি শ্রেষ্ঠ তখনই সম্ভব, যখন মানুষের মনের দরজা খুলতে পারে শব্দের টংকার। আমাদের মনের প্রতিফলন শব্দে ফুটে ওঠে। আমাদের হৃদয়কে শব্দের আয়নায় দেখা যায়। আর এই হৃদয়…
কে. পি. গোস্বামী বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ২৫ সেপ্টেম্বর ১৯৭১ ভারতের ইংরেজি ভাষার সংবাদপত্র অর্গানাইজার পত্রিকায় ‘মুজিব রিফিউজড টু এল্যাউ ইউ.এস. বেস ইন বে অব বেঙ্গল’ শিরোনামের নিচের কলামটি লেখেন। কলামটি ‘সময়ের শব্দ’ পত্রিকার পাঠকদের জন্য অনুবাদ করেছেন বাংলাদেশের লেখক ও অনুবাদক তুহিন দাস। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ যে শুধু পশ্চিম পাকিস্তানি সামরিক জান্তার ঔপনিবেশিক দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে সংগ্রাম…
কথাসাহিত্যিক দেবেশ রায় বাংলা উপন্যাস রচনার ক্ষেত্রে একটি স্বতন্ত্র ধারা সৃষ্টি করেছেন। তাঁর রচনায় নিম্নবর্গের মানুষের লড়াই ও জীবন সংগ্রাম প্রাধান্য পেয়েছে। যারা সমাজের মেরুদণ্ড কিন্তু তারা যে চিরকাল থেকে গেছে উপেক্ষিত, অবহেলিত এবং নিষ্পেষিত হয়েছে, শোষিত-নিপীড়িত হয়েছে সমাজের উচ্চবর্ণের চাইতে বেশি। তাই তাদের জীবনসংগ্রামের প্রতি শ্রদ্ধাবনত হয়ে দেবেশ রায় সৃষ্টিতে তাদের জীবনকেই মহৎ করে…
মিস জোসেফিন ম্যাকলাউড ঊনবিংশ শতাব্দীর নিউইয়র্কের মার্কিন সমাজের একজন বিশেষ প্রতিপত্তিসম্পন্না মহিলা ছিলেন। ১৮৯৫ সালে নিউইয়র্কে স্বামীজীর সঙ্গে তাঁর প্রথম পরিচয় হয়েছিল এবং এরপরে ক্রমে স্বামীজী ও তাঁর মধ্যে নিবিড় বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। স্বামীজী তাঁকে ‘জো’ বা ‘জয়া’ বলে সম্বোধন করতেন। মিস ম্যাকলাউডের অন্তরে স্বামীজীর জন্য গভীর শ্রদ্ধা ছিল। পরবর্তী সময়ে প্যারিস থেকে স্বামীজীর…
শিলিগুড়ি থেকে প্রায় ৫৬ কিমি দূরে দার্জিলিঙের সবুজ পাহাড়ের কোলে নিশ্চুপে একান্তে নিজের মতো করে দাঁড়িয়ে রয়েছে অখ্যাত একটি স্থান বড় মাংওয়া (Baramangwa)। প্রচারের অভাবে পর্যটকদের কাছে বিশেষভাবে পরিচিত হয়ে উঠতে না পারলেও একবার এখানে আসলে এর অপার সৌন্দর্য যে কোনও প্রকৃতি প্রেমিকদেরই টেনে আনবে বারবার। আর কমলালেবুপ্রেমী হলে তো আর কোনো কথাই নেই! কারণ…
মালঞ্চার মাটিতে নির্ঝরের কথা শুনে খুশিতে ভরে গেল বৈশালীর মন। নির্ঝরের কথাতে আনন্দে ভরে উঠল বৈশালীর প্রাণ। সেই খুশি, সেই আনন্দ ছড়িয়ে পড়ল বৈশালীর দেহের প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে। বৈশালীর দেহের ভেতর ‘মোহিনীআট্টম’ নাচ চলতে লাগল। ‘মোহিনী আট্টম’-এ ছেয়ে গেল বৈশালীর শরীরের মধ্যটা। বৈশালীর চোখে-মুখে স্পষ্ট ফুটে উঠল খুশি,আনন্দ। বৈশালীর চোখ-মুখ আনন্দে কেন ছেয়ে গেল, নির্ঝর তা…
।। পর্ব – ৩১।। আঁধারগ্রামে কী কী ঘটছে, খবরের কাগজ, টিভি আর ফোনের মাধ্যমে খুঁটিনাটি সবই জানতে পারছিল তেরো নম্বর। জানতে পেরেছিল, ২০০৬ সালের ৩০ ডিসেম্বর সাদ্দামের জন্য নীরবতা পালন। ১৪৪ ধারা বাড়ানোর প্রতিবাদে প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতিকে চিঠি পাঠানো। পর দিন সারা গ্রাম জুড়ে মিছিল। ২০০৭-এর ১ জানুয়ারি আঁধারগ্রাম দিবস পালন। একই সঙ্গে কৃষক দিবস…
প্রতিদিনের ব্যস্ত জীবনের কোলাহল থেকে মুক্তি পেতে চলে যেতে হবে দার্জিলিং থেকে ২১ কিলোমিটার দূরে লামাহাট্টায়। ৫৭০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত এই গ্রামে তামাং, ভূটিয়া, শেরপা ইত্যাদি পার্বত্য উপজাতির বাস। তিব্বতী লামাদের ভারত সরকার এখানে বসবাসের ব্যবস্থা করায়, সেই থেকে জায়গার নাম লামাহাট্টা। প্রকৃতির অসাধারণ রূপ বৈচিত্র্য পরতে পরতে উপলব্ধি করা যায়। পাইনের জঙ্গল, পাহাড়, আকাশ,…
বৈশালী ও নির্ঝর একই কলেজে পড়ে। বৈশালীর মা-বাবা ও এক ভাই আছে। মধ্যবিত্ত ঘরের মেয়ে। মা গৃহকর্ত্রী। বাবার সোনার দোকান। নির্ঝরের বাড়িতে বাবা-মা আছে। এক দাদা ও বৌদি রয়েছে। বাবার বড় কাপড়ের দোকান আছে । বৈশালীর বাড়ি বুনিয়াদপুর। নির্ঝরের বাড়ি মালদা জেলার পান্ডুয়াতে। বুনিয়াদপুর কলেজ। দ্বিতীয় বর্ষে পড়ত নির্ঝর। প্রথম বর্ষে পড়ত বৈশালী। সবে কলেজে…
কবিতায় ‘অশ্লীলতার’ অভিযোগে কলকাতার সিটি কলেজ থেকে চাকরিচ্যুত হওয়ার পরেও জীবনানন্দ কলকাতাতেই থেকে গিয়েছিলেন এবং এখানে ওখানে চাকরির চেষ্টা করতে শুরু করেছিলেন। কিন্তু এরপরে বছর খানেক ধরে তিনি কোথাও কোনো চাকরি পাননি। সেই সময়ে নিজের হাতখরচ ও প্রেসিডেন্সি বোর্ডিংয়ের খরচ চালানোর জন্য তিনি সামান্য দু’-একটা টিউশনি করতেন মাত্র। তারপরে ১৯২৯ সালের কোন একসময়ে তিনি খুলনা…
১৯৫৪ সালের ২২ শে অক্টোবরে জীবনানন্দের মহাপ্রয়াণ হয়ে গেছে, জীবনানন্দ দাশের নার্স শান্তি চুপচাপ ‘বনলতা সেন’ কবিতার বইটি কারো কাছ থেকে চেয়ে নিয়ে এসেছিলেন। আজ রাতে শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতালে ডিউটি সেরে বাড়ি ফিরে বইটি নিয়ে বসেছেন শান্তি। মনে পড়ছে দুর্ঘটনার পর অজ্ঞান অবস্থা থেকে প্রথমবার জেগে জ্বরের ঘোরে জীবনানন্দ হাসপাতালে গভীর রাতে ভুমেন্দ্র গুহ, সমর…