ধারাবাহিক উপন্যাস উত্তাল ১৬
।।পর্ব – ষোল।। শুধু বড়রাই নয়, বাবা-মায়েদের মুখের দিকে আর তাকানো যাচ্ছে না দেখে আঁধারগ্রাম…
।।পর্ব- ২৯।। ২০০৬-এর ১৮ ডিসেম্বর মধ্যরাতে উঠে এ ওকে সে তাকে ডেকে নিয়ে আগের দিনের কথা মতো অন্ধকার থাকতে-থাকতেই পাঁচ জনের দলটা চুপিচুপি বাজেমেলিয়া গ্রামে এসে পৌঁছল। ফাঁকা মাঠের একটা বড় গাছের আড়ালে ঘাপটি মেরে অপেক্ষা করতে লাগল, কে আসে! কে আসে! জোনাকি মিটমিট করে জ্বলছে। হঠাৎ হঠাৎ ডেকে উঠছে দু’-একটা পাখি। একটু একটু করে…
বাবা এই নিরীহ আর হাবাগোবা লোকটাকেই তোমার ভালবাসা উচিৎ কেন না যে মেয়েটির পায়ে তোমার সর্বস্ব তুমি ঢেলে দিয়েছো যে মেয়েটির ভেতরের আচার প্রকৃতি ইনস্টলেশান তোমার অনুভূতিতে এতোটা নাড়া দিয়েছে উনি তার বাবা আজ মেয়েটির ভেতর যে মনুমেন্টাল ম্যাটেরিয়ালিটি ইমেজ কম্পোজিশান যা কিছু তুমি পাচ্ছ তার প্রায় সবটাই ও পেয়েছে ওর বাবার কাছ থেকে হ্যাঁ…
সত্যিই শ্রাবণ যেন নতুন রূপে, নতুন রঙে ধরা দিল আমার জীবনে। পাহাড়ী নদীর রূপ, রস, গন্ধকে অনুভব করতে হলে বর্ষাকেই বেছে নিতে হবে। আর তাই সঙ্গী করলাম এমনই একটি দিনকে। রোজকার এই একঘেয়ে জীবনে মাঝে মধ্যেই মন হাঁপিয়ে ওঠে, প্রাণ উশখুশ করে। একটু সময় বাঁচিয়ে একটু ছুটির অবকাশ কিম্বা প্রকৃতির মাঝে নিজেকে বা নিজের কাছে…
২০২৪ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার লেখক হান কাং (Han Kang)। আজ বৃহস্পতিবার সুইডেনের স্টকহোম থেকে এ বছরের সাহিত্যে নোবেল বিজয়ীর নাম ঘোষণা করে দ্য রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্সেস। হান কাং নিজ সাহিত্যকর্মে ‘ইতিহাসের ট্রমা ও মানবজীবনের ভঙ্গুরতা’কে তীব্র কবিতাময় গদ্যের মাধ্যমে উন্মোচিত করার স্বীকৃতিস্বরূপ তাকে এই সম্মাননা দেওয়া হয়েছে। এতে আরো…
।।পর্ব- ২৮।। ২০০৬-এর গোটা অক্টোবর মাস জুড়ে আঁধারগ্রাম উত্তপ্ত। প্রায় প্রতিদিনই কিছু না কিছু হচ্ছে। এখানে সমাবেশ, ওখানে জমায়েত, তো সেখানে ধরনা কিংবা ঘেরাও। তার রেশ আছড়ে পড়ল গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে। শহর থেকে শহরতলিতে। বিভিন্ন সংবাদপত্রে ফলাও করে ছাপা হতে লাগল সেই সব খবর। তারই জেরে নড়েচড়ে বসলেন সমাজের নানা স্তরের সচেতন মানুষ। উন্মুখ হয়ে…
“বাঙালির দুর্গাপুজোয় গণিকাঘরের মাটির (বেশ্যাদ্বারের মাটি) প্রয়োজন হয়। গণিকা ও গণিকালয় নির্মূল করে দিলে এ মাটি আসবে কোথা থেকে? বেশ্যাবাড়ির মাটি ছাড়া কি দুর্গাপুজো হবে? দুর্গাপুজো হবে কি হবে না, সেই ভিত্তিতে গণিকাবৃত্তিকে সমর্থন করব কি করব না সেটা নির্ভর করে না। একসময় নীলকণ্ঠ পাখি না ওড়ালে জমিদাররা দেবী বিসর্জন স্বপ্নেও ভাবতে পারত না। এখন…
দূর থেকে বৈশালী দেখল, গ্রামের একপাশে অনেকটা জায়গা জুড়ে একটা অনেক বড় বটগাছ রয়েছে। প্রচুর তার ঝুরি। ঝুরিগুলো মাটির মধ্যে প্রবেশ করেছে। দেখে মনে হচ্ছিল,বটগাছটি একজন বৃদ্ধ আর ঝুরিগুলো বৃদ্ধটির দাড়ি আর অসংখ্য দাড়ি নিয়ে গ্রামের মধ্যে প্রবীণ হিসেবে দাঁড়িয়ে রয়েছে। বটগাছটিতে বেশ কিছু বিভিন্ন রঙের পাখির ঘর ঝুলছিল। বৈশালী ধীরে-ধীরে বটগাছটির কাছে গেল। দেখল,…
বাংলা কবিতার মতো বৈচিত্র্য বিশ্ব সাহিত্যেও আছে কিনা জানি না, তবে বিশ্ব সাহিত্যের প্রেরণা নিয়ে বাঙালি কবিরা যথেষ্টই সমৃদ্ধ এবং ভিন্নতর পথের দিশারি হয়ে উঠেছেন তা বলাই বাহুল্য। মধুসূদনের যুগ থেকে এই কাব্য সাধনার পথ প্রশস্ত হয়ে চলেছে। কল্লোল, কালি-কলম, কৃত্তিবাস, পরিচয়, কবিতা, হাওয়া ৪৯ এমনকি কবিসম্মেলন প্রভৃতি পত্রিকাগুলিও নানা সময়ে কাব্য-সাহিত্যের জগতে নানা বৈচিত্র্যের…
গিদ্দা পাহাড়ে গিয়ে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুকে আবিষ্কার করলাম অন্য রূপে, সঙ্গে অপরূপ পাহাড়ি সৌন্দর্য: কার্শিয়াং মানেই এখন যেন অন্য অনুভূতি। এতবার কার্শিয়াং-এ ছুটে গেছি কিন্তু এবারের কার্শিয়াং-এর ছন্দ গন্ধ বর্ণ আমার কাছে যেন অন্য রূপে ধরা দিল। আমি নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না; নিজের উপস্থিতি সম্পর্কেও আমার মধ্যে দ্বিধা-দ্বন্দ্ব কাজ করছিল। সত্যিই কী আমি…
“প্রফেট গান” উপন্যাসটি পল লিঞ্চ (Paul Lynch) যখন লিখতে শুরু করেছিলেন, তিনি ভেবেছিলে ছিলেন এটি তার ক্যারিয়ারকে ধ্বংস করে দেবে। “প্রফেট গান” “১৯৮৪” এর মত ডিস্টোপিয়ান ক্লাসিকের সাথে তুলনা করেছে। কিন্তু লিঞ্চ বইটির রাজনৈতিক গুরুত্ব দিতে চান না। এই , তিনি বলেন, বইটি গভীরভাবে ব্যক্তিগত ছিল। এটা বুকার জিতেছে। পল লিঞ্চ বলেছিলেন যে প্রায়শই তিনি…
প্রকৃতপক্ষে মহালয়ার তিথি থেকেই দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে শারদোৎসবের সূত্রপাত হয়ে থাকে। লোকসাংস্কৃতিক গবেষকদের মতে—বাংলা সালপঞ্জির আশ্বিন মাসের অমাবস্যার এই মহালয়া নামটির উৎসের মধ্যেই এর ধর্মীয় সংস্কারগত তাৎপর্যকে খুঁজে পাওয়া সম্ভব। এজন্য—এই বিশেষ দিনটিতে পিতৃপুরুষের উদ্দেশ্যে তর্পণ করবার যে রেওয়াজ স্মরণাতীত কাল থেকে প্রচলিত রয়েছে, সবার আগে সেটারই পরিপ্রেক্ষিতে এই নামটির নিহিতার্থ সন্ধান করবার প্রয়োজনীতা দেখতে পাওয়া…
।। পর্ব- ২৭।। কয়েক জন মিলে রাজকুমারকে কোনও রকমে ধরাধরি করে ভ্যানরিকশায় চাপিয়ে, একজন তো প্যাডেল করছিলই, বাকিরা পিছন থেকে উন্মাদের মতো ঠেলতে ঠেলতে বড় রাস্তায় নিয়ে এল। হাত দেখালেও কোনও গাড়ি থামছে না দেখে, গাড়িরাস্তার মাঝখানে বুক চিতিয়ে সটান দাঁড়িয়ে পড়ল তেরো নম্বর। প্রচণ্ড জোরে ছুটে আসা একটা গাড়ি বাধ্য হয়ে ব্রেক কষে দাঁড়িয়ে…