জীবনানন্দ দাশের ‘তোমরা যেখানে সাধ চলে যাও’

তোমরা যেখানে সাধ চ’লে যাও — আমি এই বাংলার পারে র’য়ে যাব; দেখিব কাঁঠালপাতা ঝরিতেছে ভোরের বাতাসে; দেখিব খয়েরি ডানা শালিখের সন্ধ্যায় হিম হ’য়ে আসে ধবল রোমের নিচে তাহার হলুদ ঠ্যাং ঘাসে অন্ধকারে নেচে চলে–-একবার–দুইবার—তারপর হঠাৎ তাহারে বনের হিজল গাছ ডাক দিয়ে যায় হৃদয়ের পাশে; দেখিব মেয়েলি হাত সকরুণ—শাদা শাঁখা ধূসর বাতাসে শঙ্খের মতো কাঁদে:…

Read More

বাংলা কবিতায় জীবনানন্দের নগ্ন নির্জন হাত

কেন কবিতা লেখেন? পরিবার, সমাজ বা রাষ্ট্র নামক খোঁয়াড়ে নিরবিচ্ছিন্ন তৃপ্তির ঢেকুর না তুলে পাঠক কেন কবিতার দিকে হাত বাড়ান? কোন্ ক্ষুধা তার অনিশ্চয়তা বাড়িয়ে দেয়? এই ভাবনাগুলো চিরায়ত। আসলে এসবের সন্তোষজনক কোন উত্তরও হয়তো পাওয়া যাবে না কোনদিন। রবীন্দ্রনাথের হাত ধরে বাংলা কবিতা অনেকটাই সাবালক হয়ে উঠেছিল। কিন্তু পশ্চিমা শিক্ষায় শিক্ষিত ত্রিশের অধ্যাপক কবিগণ…

Read More

লালন শাহের ইসলামীকরণ বিতর্ক

লালন ফকিরের জন্মসাল সম্পর্কে আজও কেউ নিঃসন্দেহ নেন। তবুও সাধারণভাবে তাঁর জীবনকাহিনী নিয়ে মানুষ যতটা পরিচিত রয়েছেন, সেটা এরকম— লালন এক হিন্দু বংশে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। পরে তিনি মহাব্যাধিতে আক্রান্ত হলে তাঁর আত্মীয়স্বজনরা তাঁকে পরিত্যাগ করেন। সেই সময়ে এক মুসলমান রমণী কর্তৃক তিনি শুশ্রূষা পেয়েছিলেন। পরবর্তীকালে লালন ফকির ইসলাম ধর্মগ্রহণ করেন। নিজের জাত সম্পর্কে তাঁকে কোন…

Read More

পুরাণ কাহিনী: অসূয়া

শুধু মর্তে কেন? পুরাণেও দেখা যায়,স্বর্গের দেবীরাও ঈর্ষা (অসূয়া) মুক্ত ছিলেন না। অত্রি মুনির স্ত্রী ছিলেন, অনুসূয়া ছিলেন অপূর্ব রূপবতী ও গুনবতী। যার গর্ভে দুর্বাসা মুনির জন্ম হয়েছিল। তার সতীত্বের খ্যাতি জগৎ-জোড়া। অনুসূয়ার সতীত্বের খ্যাতি, এই মর্তলোক ছাড়িয়ে, স্বর্গের দেবলোকেও ছড়িয়ে পড়েছিল। তাতে স্বর্গের দেবীরা (সরস্বতী,লক্ষ্মী,দূর্গা) বিচলিত হয়ে পড়েছিলেন। তারা ভেবেছিলেন, অনুসূয়ার সতী হিসাবে এতোটা…

Read More

ধারাবাহিক উপন্যাস ‘উত্তাল’ (ত্রিশ)

।। পর্ব – ৩০।। কলকাতার রাজনীতিবিদ, বুদ্ধিজীবীরা বুঝতে পারলেন, এই আন্দোলনটাকে দমন করার জন্য রাজ্য সরকারের দমনপীড়ন নীতির পাশাপাশি অর্ধসত্য ও অসত্যের পথ ধরেছে সরকারের প্রধান শরিক দল সি পি এম। যে কোনও দেশের যে কোনও সরকারের পিঠ যখন একদম দেয়ালে ঠেকে যায়, তখন তারা কোনও রাস্তা না‌ পেয়ে, মরিয়া হয়ে এই পথ নেয়। এটাকে…

Read More

এই শরতের গল্পগাথা

শিশিরে সিক্ত পদ্ম যেমন বোহেমিয়ান ইনহিবিশন খুলে রাখে একে একে নির্বিকার শিউলি কখন ঝরে পড়ে উতল হাওয়ায় রোমাঞ্চ লাগে সেই নদীটির সুমোহনায় কাঁপতে কাঁপতে শীতের পরশ খুইয়ে দিয়ে উষ্ণ রচনা লেখে ঠোঁটে ঠোঁটে আদর ওমে ভাসতে ভাসতে বারদরিয়ায় সমর্পণে সুখের মধ্যে সুখ ডুবে যায় যেমন করে এই কুয়াশায় জীবন আভাস মৃত্যুহিম সমূহ পেরিয়ে আগুনে সেঁকার…

Read More

কোঠিগাঁওয়ের পথে

প্রথমেই বলে রাখা ভাল যারা গভীর ভাবে নির্জনতাকে এবং নিস্তব্ধকে অনুভব করতে চান, একমাত্র তাদের জন্যেই হয়ত এই জায়গাটির আবিষ্কার। এখানে এসে নিজের কণ্ঠস্বরও ভীষণ কর্কশ মনে হয়। এতটাই মোলায়েম এবং নরম এই পরিবেশ। তাই এখানে আসামাত্র প্রতিদিনের সমস্ত ক্লান্তি এক নিমেষে উধাও হয়ে যায়। সবুজ গালিচায় মোড়া পাহাড়ী ঢাল আর মাঝেমাঝে আঁকাবাঁকা পাহাড়ী পথ…

Read More

লক্ষ্মী: এক বিচিত্র দেবীর ঐতিহাসিক বিবর্তন

সুকুমার রায় লিখেছিলেন—‘ছিল বেড়াল হয়ে গেল রুমাল!’ প্রশ্ন হল যে, তিনি যদি দেবী লক্ষ্মীর বাহনের বিবর্তন দেখতেন, তাহলে কি বলতেন? কারণ—আদিতে লক্ষ্মীর বাহন কিন্তু প্যাঁচা ছিল না, ছিল পশুরাজ সিংহ! বৈদিক সাহিত্যে লক্ষ্মী সম্পর্কিত যে বর্ণনা পাওয়া যায়, সেটার থেকে পরিষ্কার বোঝা যায় যে—বৈদিকযুগের মধ্যেই প্রাচীন ভারতে লক্ষ্মী সংক্রান্ত ধর্মবিশ্বাসের জন্ম হয়েছিল। এই দেবী সংক্রান্ত…

Read More

বিমূর্ত কবিতা ব্যক্তিজীবনের অভিক্ষেপ

আজকের কবিতায় কবির ব্যক্তিজীবনের প্রতিফলনই বেশি ঘটে। কবিতা হয়ে ওঠে ব্যক্তিনিভৃতির বারান্দা। কবি নিজস্ব দৃষ্টিতেই তাঁর জীবনসীমানার পরিমাপ করেন। তিনি যেমন সূর্য-চাঁদ উদিত হওয়া দেখেন; তেমনি অস্ত যাওয়াও দেখেন। তার নিজস্ব দিনযাপন এবং রাত্রিযাপনও স্থান পায় কবিতায়। কবি কী পেলেন, কী পেলেন না, কী অচরিতার্থ থাকল সেই হাহাকারের প্রতিচ্ছবি ফুটে ওঠে। প্রেম-প্রণয় এমনকী রতিলীলার নানা…

Read More

মালঞ্চা এবং: বৈশালী ও নির্ঝরের কথা

বৈশালী খেয়াল করল, এত রোদ সত্ত্বেও নির্ঝরের মাথায় কোনও টুপি নেই। হাতে কোনও ছাতা নেই। গ্রীষ্মকালে প্রচন্ড রোদে গরমের ঝাপটা চোখে এসে লাগে, চোখ জ্বালা করে। এজন্য বেশির লোক এই গ্রীষ্মকালে চোখে গগগস পরে। কিন্তু বৈশালী নির্ঝরের হাতে বা বুকপকেটে কোনও গগলস দেখতে পেল না। নির্ঝর বৈশালীকে দেখে দ্রুত জায়গা থেকে সরে যাচ্ছিল। বৈশালী বলে…

Read More

ধারাবাহিক উপন্যাস ‘উত্তাল’ ২৯

।।পর্ব- ২৯।। ২০০৬-এর ১৮ ডিসেম্বর মধ্যরাতে উঠে এ ওকে সে তাকে ডেকে নিয়ে আগের দিনের কথা মতো অন্ধকার থাকতে-থাকতেই পাঁচ জনের দলটা চুপিচুপি বাজেমেলিয়া গ্রামে এসে পৌঁছল। ফাঁকা মাঠের একটা বড় গাছের আড়ালে ঘাপটি মেরে অপেক্ষা করতে লাগল, কে আসে! কে আসে! জোনাকি মিটমিট করে জ্বলছে। হঠাৎ হঠাৎ ডেকে উঠছে দু’-একটা পাখি। একটু একটু করে…

Read More

শিশির আজম এর পাঁচটি কবিতা

বাবা এই নিরীহ আর হাবাগোবা লোকটাকেই তোমার ভালবাসা উচিৎ কেন না যে মেয়েটির পায়ে তোমার সর্বস্ব তুমি ঢেলে দিয়েছো যে মেয়েটির ভেতরের আচার প্রকৃতি ইনস্টলেশান তোমার অনুভূতিতে এতোটা নাড়া দিয়েছে উনি তার বাবা আজ মেয়েটির ভেতর যে মনুমেন্টাল ম্যাটেরিয়ালিটি ইমেজ কম্পোজিশান যা কিছু তুমি পাচ্ছ তার প্রায় সবটাই ও পেয়েছে ওর বাবার কাছ থেকে হ্যাঁ…

Read More
error: বিষয়বস্তু সুরক্ষিত !!